চট্টগ্রামে এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার পেয়েছেন কমপক্ষে ছয় শ শিল্পী, শ্রমিক ও দিনমজুর। খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার পাঁচ শ পরিবার পেয়েছেন সরকার প্রধানের এমন উপহার।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘গত একবছর থেকে আমরা করোনার সঙ্গে লড়াই করছি। এ লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
চট্টগ্রাম
এবার চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়েছেন ছয়’শ শিল্পী, শ্রমিক ও দিনমজুর।
বুধবার দুপুরে নগরীর ডা. খাস্তগীর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এসব উপহার তাদের হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) বদিউল আলম।
এসব উপহার সামগ্রীর প্রতি প্যাকেজে ছিল ৮ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি আলু, ১ লিটার সয়াবিন তেল ও ১টি সাবান।
ত্রাণ বিতরণকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) বদিউল আলম বলেন, ‘করোনায় লকডাউনের কারণে কর্মহারা দুঃস্থ শিল্পী, কলাকুশলী, অস্বচ্ছল নির্মাণ শ্রমিক, ভ্যান চালক, দিনমজুর, বেদে ও অন্যান্য শ্রেণি পেশার কর্মহীন মানুষদেরকে ত্রাণের আওতায় আনতে জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন।
‘লকডাউনে কর্মহারা কেউ সরকারী ত্রাণ পাওয়া থেকে যাতে বঞ্চিত না হয় সে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নজরদারী করা হচ্ছে। আমরা চাই এই পরিস্থিতিতে কেউ অনাহারে ও কষ্টে থাকবেনা। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে যারা প্রকাশ্যে সাহায্য নিতে লজ্জ্বাবোধ করে, সাহায্য চেয়ে আমাদের কাছে টেলিফোন ও এসএমএস করছেন তাদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, মহামারি করোনা থেকে রক্ষা পেতে হলে মাস্ক পরার পাশাপাশি শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে, জরুরী প্রয়োজনে ঘরের বাইরে গেলে একজন আরেক জনের কাছ থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস.এম জাকারিয়া, এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা সজীব কুমার চক্রবর্তী, জেলা শিল্পকলা একাডেমি কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাট্য ব্যক্তিত্ব সাইফুল আলম বাবু, জেলা কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন সিকদার ও নাট্যব্যক্তিত্ব তাপস শেখর দাশ সহ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা।
খুলনা
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজন ও অর্থায়নে করোনায় কর্মহীন সাড়ে পাঁচশত পরিবারের মাঝে বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে প্রধানমন্ত্রীর উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী। খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর এসব উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে দিঘলিয়া উপজেলায় করোনার প্রভাবে কর্মহীন, দু:স্থ, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও সাড়ে পাঁচশত কর্মহীনের মাঝে উপহার সামগ্রী দেয়া হয়। প্রতি জনকে চাল ১০ কেজি, এক কেজি ডাল, তেল ৫০০ মিলিলিটার, আলু দুই কেজি, পেঁয়াজ এক কেজি, চিনি ৫০০ গ্রাম, দুধ ৫০০ গ্রাম ও সেমাই এক প্যাকেট দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক উপজেলায় বঙ্গবন্ধু কর্ণারের উদ্বোধন এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলার উদ্বোধন করেন। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন ঘরে ঘরে গিয়েও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।
এছাড়া তিনি দিঘলিয়া উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় মানুষের মাঝে এমন উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।
খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ইকবাল হোসেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোল্যা মো. আকরাম হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলমসহ উপজেলার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ময়ময়সিংহ
এসময় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘গত একবছর থেকে আমরা করোনার সঙ্গে লড়াই করছি। এ লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মানুষকে নিরাপদ রাখার স্বার্থে লকডাউনে অসহায়-দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য ও উপহার দিচ্ছেন। আমরা তা সবার কাছে এবং একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেবার চেষ্টা করেছি। করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী মানবতার যে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন তা বিশ্বে বিরল।
বুধবার বেলা ২টা ৩০ মিনিটে জয়নুল আবেদিন পার্ক বৈশাখী মঞ্চে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২১০ জন অসহায়-দরিদ্র হোটেল বয় এবং পত্রিকার হকারদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য ও উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সীমিত সম্পদ দিয়ে মানুষকে সর্বাত্মক ভালো রাখার চেষ্টা করছেন। প্রতিবেশী অনেক দেশের তুলনায় আমরা ভালো আছি। আমাদেরও উচিত তার হাতকে শক্তিশালী করা এবং তার জন্য দোয়া করা।’
মেয়র তার বক্তব্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে সবসময় এবং সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান, জনসমাগম এড়িয়ে চলা এবং নিয়মিত বিরতিতে সাবন-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২১০ জন অসহায়-দরিদ্র হোটেল বয় এবং পত্রিকার হকারদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য ও উপহার বিতরণ করা হয়। ছবি: নিউজবাংলা
করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর উপহার সামগ্রী পেয়ে অত্যন্ত খুশি অসহায়-কর্মহীনরা। প্রাদুর্ভাবের সময় সহায়তা দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা।
উপহার সামগ্রীর প্রতি প্যাকেজে ছিল ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি পেয়াজ, ১ কেজি আলু, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি লবন, ১ লিটার তেল ও ১ প্যাকেট সেমাই।
খাদ্য উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম ও ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বাবুল হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাহাঙ্গীর আলম।