কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশের উপ সহকারী পরিদর্শকসহ তিনজন আহত হয়েছেন। এদের একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বুধবার সকাল ৬ টার দিকে উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের শালঘরমধুয়া গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় উভয়পক্ষের প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৫ রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আহতরা হলেন, বাঁশগ্রাম পুলিশ ক্যাম্পের উপ সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) ফরিদ, শালঘরমধুয়া গ্রামের গুলিবিদ্ধ ফারুক ও রাশিদুল হক। আহতরা কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্থানীয় একটি কলেজের প্রভাষক আলী হোসেন ও তোফাজ্জেল গ্রুপের সঙ্গে জাফর ও লিটন গ্রুপের বিরোধ চলছে। পূর্ব বিরোধের জেরে গত ৪ এপ্রিল জাফরের সমর্থক আরিফকে তোফাজ্জেলের এলাকায় পেয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়।
এ ঘটনার জেরে গত ৬ এপ্রিল উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে জাফর গ্রুপের মুকুল ও তোফাজ্জেল গ্রুপের ওয়াদুদ আহত হন। সে সময় উভয়পক্ষের প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় মামলা করেন।
ওই মামলার আসামিরা জামিন নিয়ে বুধবার ভোরে এক পক্ষ অপর পক্ষের ওপর হামলা চালায়। তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং শতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে ও আগুন লাগিয়ে দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় ফারুক গুলিবিদ্ধ হন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রাকিব হাসান বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে থানায় দুইটি মামলা রয়েছে। বুধবার সকালে হঠাৎ দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।এদিকে সংঘর্ষের সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার ক্যামেরা পারসনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এটিএন বাংলার কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি তুহিন আহমেদ। তিনি বলেন ক্যামেরা পারসন নাজমুল হাসিবকে থানায় নিয়ে এসে চোখ বেঁধে নির্যাতন করেছে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খায়রুল আলম নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন এ জাতীয় কোনো ঘটনা ঘটেনি।