কিশোরগঞ্জে সাত বছরের শিশুছাত্রকে পেটানোর অভিযোগে মাদ্রাসার শিক্ষককে গ্রামছাড়া করেছে এলাকাবাসী।
ওই শিক্ষকের নাম কারি খাইরুল ইসলাম। তিনি কুলিয়ারচর উপজেলার রামদী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আত তালিমুন নববী সাঃ দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক। তার বাড়ি ভৈরব উপজেলার সরকার বাড়িতে।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব জসিম উদ্দীন ভূইয়া জানান, নিজের সব জিনিসপত্র নিয়ে বুধবার সকালে তিনি গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন।
মারধরের শিকার ওই মাদ্রাসার ছাত্র নিউজবাংলাকে জানান, ২৬ এপ্রিল সকালে দাঁতের ডাক্তার দেখানোর জন্য শিশুটি বাড়িতে যায়। ডাক্তার দেখিয়ে সন্ধ্যায় মাদ্রাসায় ফিরতে দেরি হয় তার। এ কারণে খাইরুল তাকে বেত দিয়ে পেটান।
শিশুটির চাচা জানান, তার ভাই (শিশুর বাবা) বিদেশে থাকেন। একমাত্র ছেলেকে মাওলানা বানানোর আশায় এই মাদ্রাসায় ভর্তি করেছিলেন। মারধরের পর সে বিষয়টি পরিবারকে জানালে তারা মাদ্রাসায় যান।
তিনি আরও জানান, হুজুরের ইজ্জত নষ্ট করতে চান না তারা। তাই কোনো মামলা করেননি। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসা করেছেন।
তা ছাড়া গ্রামবাসী অনেক কষ্টে মাদ্রাসাটি নির্মাণ করেছে। হুজুরের জন্য মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুণ্ন হোক তা তারা চান না। অনেক ভেবেচিন্তেই ওই হুজুরকে গ্রামছাড়া করার এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সৌরভ আহম্মেদ জানান, ছাত্রদের বেধড়ক পেটানো এই মাদ্রাসার জন্য নতুন কিছু নয়। কিছুদিন পরপরই এমন ঘটনা শোনা যায়। প্রতিবারই বিষয়গুলো ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়।
এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কিছুদিন আগেও একজন ছাত্রকে পেটানোর অভিযোগ আছে। সেই ছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। কিন্তু পরিবার বা মাদ্রাসা থেকে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
মাদ্রাসাটির ভারপ্রাপ্ত মোহতামিম মাওলানা আব্দুল লতিফ জানান, গ্রাম্য সালিশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে মাদ্রাসা ও গ্রাম ছাড়তে বলা হয়েছে। তিনি সালিশে সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তার জায়গায় নতুন শিক্ষক দেয়া হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য খাইরুলকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ. কে. এম সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘শিশুটির পরিবার বা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’