গরম আর রোজার সুযোগে বেশি দামে তরমুজ বিক্রি করায় বরিশালের পর কুষ্টিয়াতেও আড়তে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের দুই জন বিচারক চার তরমুজ ব্যবসায়ীকে মোট ১১ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বনি আমিন ও রিজু তামান্না সোমবার দুপুরে এই অভিযান চালান।
বনি আমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের অভিযোগ ছিল ব্যবসায়ীরা পিস হিসেবে তরমুজ কিনে ওজনে কেজি হিসেবে বিক্রি করেন। আমরা কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখেছি ফল আড়তের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী মণ হিসেবেই কিনে আনেন। কিন্তু কেজিপ্রতি ২০ টাকাও লাভ করেছেন কেউ কেউ। এদের চারজনকে জরিমানা করা হয়েছে।’
ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম আর আবদুস সামাদকে দুই হাজার এবং জামান ট্রেডার্সের রবিউল ইসলাম ও মনিরুল ইসলামকে তিন হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
সবগুলো দোকানই কুষ্টিয়া পৌর বাজারের সামনের ফল আড়তের।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযানে পুলিশ সদস্য ছাড়াও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া জেলা বাজার কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী ফলের ক্ষেত্রে কেজিতে ১০ টাকা লাভ করতে পারবেন এমন বিধান রয়েছে। তবে তরমুজের ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা আছে। কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকার বেশি লাভ করতে পারবেন না। আর কেজি বা পিস যেভাবেই কিনবে সেভাবে বেচতে হবে।
রোজার এক সপ্তাহ আগেও তরমুজ ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সে সময় তুলনামূলক বড় ও ভালো মানের তরমুজ ২৭ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
রমজান শুরু আগেই দাম বেড়ে ৩৫/৪০ এ চলে যায়। এভাবে বাড়তে বাড়তে গত কয়েকদিন কেজি ৫০ থেকে ৫৫ তে দাঁড়ায়।
এই প্রবণতা কেবল কুষ্টিয়া নয়, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাতেই তরমুজের হঠাৎ দাম বৃদ্ধি হতে দেখা গেছে। ঢাকায় দাম বাড়তে বাড়তে কেজিপ্রতি ৭০ টাকাও ছাড়িয়ে গেছে কোথাও কোথাও।
কুষ্টিয়ায় অভিযানের দিন বরিশালেও অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখানে ১৪ জন ব্যবসায়ীকে ১০ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
দাম বৃদ্ধির সুফল পায়নি কৃষক
বরগুনায় ব্যাপক হারে তরমুজ চাষ হয় গত কয়েক বছর ধরে। জেলায় অনুসন্ধান চালিয়ে নিউজবাংলা জেনেছে, লকডাউনে পরিবহন সংকটের কারণে পণ্য পাঠানো যাবে না বলে কৃষকদেরকে ভয় দেখিয়ে কম দামে ক্ষেত কিনেছেন ব্যবসায়ীরা।
রোজার আগেই এভাবে ফসলের মাঠ কৃষকরা ব্যাপারিদের কাছে বিক্রি করে দেয়ার পর পরই দাম বেড়ে যায়। আর রোজার শুরুতে যত দাম ছিল এখন তার চেয়েও দ্বিগুণ হয়েছে।
অর্থাৎ রোজায় দাম বৃদ্ধির কোনো সুফলই পায়নি তরমুজ চাষিরা। রোজার প্রথমে বাজার দর হিসাব করে দেখা গেছে কেবল বরগুনাতেই চাষিরা ঠকেছেন ১৩৭ কোটি টাকার মতো।