বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই নওগাঁয়

  •    
  • ২৬ এপ্রিল, ২০২১ ১৯:৪১

প্রতিদিনই বাড়ছে শনাক্তের সংখ্যা। জেলায় মেডিক্যাল কলেজ থাকলেও সেখানে নেই কোনো পিসিআর ল্যাব অর্থাৎ করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা। নওগাঁ সদর হাসপাতালে আইসিইউ বিভাগটিই স্থাপন করা হয়নি। এমন কি হাসপাতালটিতে সেন্ট্রাল অক্সিজেনেরও কোনো ব্যবস্থা নেই।

রাজশাহী বিভাগে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হটস্পটে পরিণত হয়েছে নওগাঁ জেলা। প্রতিদিনই বাড়ছে শনাক্তের সংখ্যা। জেলায় মেডিক্যাল কলেজ থাকলেও সেখানে নেই কোনো পিসিআর ল্যাব অর্থাৎ করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা। নওগাঁ সদর হাসপাতালে আইসিইউ বিভাগটিই স্থাপন করা হয়নি। এমন কি হাসপাতালটিতে সেন্ট্রাল অক্সিজেনেরও কোনো ব্যবস্থা নেই।

জেলার আরও সাতটি উপজেলারও একই অবস্থা। শুধু পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুর উপজেলা হাসপাতালে গত ১৩ এপ্রিল উপজেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল এবং নওগাঁ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের উদ্যোগে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিলিন্ডার বসানো হয়।

সদর হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব না থাকায় নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবে। সেখান থেকে রিপোর্ট আসতে সময় লাগে ৫-৬ দিন।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ জেলায় সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। বর্তমানে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন অন্তত ৩৫ জন করোনা রোগী। বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন আরও সাড়ে ৬০০ জন।

প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন নমুনা পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালে আসেন। এদের মধ্যে অন্তত পাঁচজনের রিপোর্ট পজেটিভ আসে।

নওগাঁয় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৯৭০ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত আাইসিইউ বেড, পিসিআর ল্যাব এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের দাবি উঠেছে জেলার সচেতন মহল থেকে।

পৌর এলাকার পার-নওগাঁ মহল্লার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এত বড় একটি জেলা আমাদের নওগাঁ। কিন্তু পিসিআর ল্যাব নেই। নমুনা সংগ্রহ করে পাঠাতে হচ্ছে রাজশাহী বা ঢাকাতে। ফলাফল আসতে দীর্ঘ সময় লাগছে। দ্রুত নওগাঁয় একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।‘

শহরের থানার মোড়ের বাসিন্দা সাংস্কৃতিক কর্মী এন.আর. খোরশেদ আলম রাজু বলেন, ‘নওগাঁ মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দুবছর পার হয়েছে। সেখানে তো করোনা পরীক্ষার জন্য একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করাই যায়। নওগাঁ সদর হাসপাতালের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে আইসিইউ এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা। কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে এটা এখন সময়ের দাবি।’

শহরের মুক্তির মোড়ের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের জেলায় প্রায় ৩০ লাখ মানুষের বাস। প্রতিদিনই অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে করোনায়। অথচ এখন পর্যন্ত পিসিআর ল্যাব, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ও আইসিইউ বেড নেই, যা অনেক আগেই স্থাপন করা উচিত ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল। এর দায়ভার তাদেরই নিতে হবে।‘

জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ সাঈদুল হক নিউজবাংলাকে জানান, নওগাঁ সদর হাসপালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ইউনিট স্থাপনের কাজ চলছে। ছয়মাস আগে কাজ শুরু হলেও মাঝখানে বন্ধ ছিল। এছাড়া আইসিইউ বেডসহ করোনা রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

এক বছরের বেশি সময় ধরে করোনা মহামারি চলছে, এর মধ্যে নওগাঁ সদর হাসপাতালে আইসিইউ বেড ও সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়নি কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গত বছর করোনার তেমন প্রকোপ নওগাঁয় ছিল না। চলতি বছর বেড়েছে। এ কারণে আমরা আগে চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাইনি। চলতি মাসে চাহিদাপত্র দিয়েছি। আশা করছি, খুব দ্রুত করোনা রোগীদের সঠিকভাবে চিকিৎসা দিতে পারব।’

নওগাঁর ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. মনজুর-এ-মুর্শেদ নিউজবাংলাকে জানান, নওগাঁয় করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বেড সংকট নেই। তাদের চিকিৎসার জন্য মোট ২০১টি আইসোলেশন বেড রয়েছে। হাসপাতালে ৭৯টি বেড এবং হাসপাতালের বাইরে ১২২ বেডে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

‘জেলায় করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য মোট ৭৪ জন চিকিৎসক, ৩৫ জন মেডিক্যাল অ্যাসিসটেন্ট এবং ৮৫ জন নার্সসহ আরও ৪৯ জন স্টাফ আছেন। নওগাঁর পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুরে তিনটি উপজেলা হাসপাতালে মোট ২০১ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর রয়েছে ১৮টি।

তবে নওগাঁ সদর হাসপাতাল ও জেলার অন্য ৭টি উপজেলা রাণীনগর, আত্রাই, বদলগাছী, মহাদেবপুর, মান্দা, পত্নীতলা উপজেলা হাসপাতালে আইসিইউ এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা নেই।

তিনি জানান, নওগাঁয় পিসিআর ল্যাব, আইসিইউ বেড এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন ইউনিট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অল্প কিছুদের মধ্যেই তা সম্পন্ন হবে।

এ বিভাগের আরো খবর