বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশে ফেরার অপেক্ষায় স্থলবন্দরে শত শত মানুষ

  •    
  • ২৬ এপ্রিল, ২০২১ ১৭:১২

চিকিৎসা বা অন্য কোনো কাজে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভিসার মেয়াদ যদি ১৫ দিনের কম থাকে, সেক্ষেত্রে ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত বন্ধ থাকলেও তারা দেশে ফিরতে পারবেন। বাংলাদেশ মিশনের অনুমতি নিয়ে বেনাপোল, আখাউড়া এবং বুড়িমারী হয়ে তারা দেশে আসতে পারবেন। তবে অবশ্যই পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে করোনা নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে। সেই পরীক্ষার সময়সীমা বাংলাদেশে প্রবেশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হতে হবে।

ভারত থেকে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন আসা ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধের ঘোষণার পর সোমবার যশোরের বেনাপোল বন্দরে অপরপাশে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় ২০০ বাংলাদেশি। এদের অধিকাংশই মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন।

স্বাধীনতার পর এই প্রথমবারের মতো যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারতের সঙ্গে পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

রোববার ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

তবে সরকার জানিয়েছে চিকিৎসা বা অন্য কোনো কাজে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভিসার মেয়াদ যদি ১৫ দিনের কম থাকে, সেক্ষেত্রে ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত বন্ধ থাকলেও তারা দেশে ফিরতে পারবেন।

নয়াদিল্লি, কলকাতা এবং আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনের অনুমতি নিয়ে বেনাপোল, আখাউড়া এবং বুড়িমারী হয়ে তারা দেশে আসতে পারবেন। তবে অবশ্যই তাদের পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে করোনা নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে। সেই পরীক্ষার সময়সীমা বাংলাদেশে প্রবেশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হতে হবে।

সীমান্ত বন্ধের ঘোষণার পর থেকেই দুই দেশের আটকে পড়া যাত্রীরা ছুটতে থাকেন সীমান্তের দিকে।

সোমবার সকালে বাংলাদেশ সীমান্তে আটকা পড়েন ছয় মেডিকেল ছাত্রসহ প্রায় ২০ ভারতীয়। অন্যদিকে, ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায় আটকা পড়ে আছেন প্রায় ২০০ বাংলাদেশি। আটকা পড়া যাত্রীদের একজন মনির হোসেন জানান, দশ বছরের শিশুকে নিয়ে হার্টের চিকিৎসার জন্য চেন্নাই গিয়েছিলেন তিনি। অপারেশন শেষে আজ ভোরে পেট্রাপোলে পৌঁছে সীমান্ত বন্ধের খবর পেয়েছেন। ভারতে থাকার মতো বাড়তি কোনো টাকাও নেই তাদের কাছে।

সুকুমার দেবনাথ নামে এক বাংলাদেশি বলেন, ‘মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে চিকিৎসার জন্যে যাচ্ছিলাম কিন্তু এখানে এসে আটকে গেলাম।'

যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকলেও পণ্যবাহী গাড়িগুলো ঢুকেছে আগের মতোই। তবে সেগুলোতে ছিটানো হয়েছে জীবাণুনাশক

ভারতের একটি সূত্র জানায়, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে আটকে পড়া বাংলাদেশি যাত্রীরা সকাল থেকে না খেয়ে আছে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশীদের ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।বেনাপোল ইমিগ্রশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহসান হাবিব জানান, ‘আটকে পড়া যাত্রীদের দেশে ফেরত নেয়ার বিষয়ে সকাল থেকে কোনো নতুন কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে ভারতীয় ছাত্রদের বিষয়ে নির্দেশনা আসতে পারে।’এদিকে দুপুর ১২টার দিকে কোলকাতার ডেপুটি হাই কমিশনের অফিস সহকারি সাদিয়া শারমিন বদলিজনিত কারণে বিশেষ ছাড়পত্র নিয়ে পরিবারসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করলে ইমিগ্রেশন তাদের প্রবেশের অনুমতি দেয়।

যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকলেও বেনাপোল-পেট্রাপোলে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান। তবে তিনি জানান, অন্যদিনের চেয়ে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ কম।

ভারত-ভুটান থেকে পণ্য আসছে বুড়িমারীতে

সোমবার সকাল থেকে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে কোনো যাত্রী দেশে ঢোকেনি বা ভারতে যায়নি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভারত ও ভুটান থেকে পণ্য পরিবহন চালু রয়েছে।

বুড়িমারী স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি কারক সমিতির সভাপতি ও পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রী আসা-যাওয়া বন্ধ থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চলছে।

লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের সারি। ছবি: নিউজবাংলা

ভারতে চালকদের করোনা নমুনা পরীক্ষা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ এবং চালকদের সনদও দিচ্ছে। অপরদিকে বাংলাদেশি চালকদেরও করোনা পরীক্ষায় সনদ দিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যাদের করোনা নেগেটিভ রয়েছে তারাই পণ্য নিয়ে যাতায়াত করছে।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার কেফায়েত উল্লাহ মজুমদার বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রী চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে করোনা পরীক্ষা করে আমদানি-রপ্তানি চলছে।

সাতক্ষীরা সীমান্তে বেড়েছে বিজিবির টহল

সাতক্ষীরার ভোমরা ইমিগ্রেশন দিয়ে এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে যাত্রী পারাপার। তবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সীমান্ত বন্ধ ঘোষণার পরে বেড়েছে বিজিবির টহল। অবৈধ যাতায়াত বন্ধে ব্যাপক উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন বিজিবির কর্মকর্তারা।

সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আল মাহমুদ জানান, সীমান্তে বিজিবির টহল ও লোকবল বাড়ানো হয়েছে। অবৈধ যাতায়াত বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।

সীমান্তে কর্মরত বিজিবির কর্মকর্তারা জানান, ইছামতিসহ সীমান্ত কিছু নদীর কারণে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবিকে বেশ বেগ পেতে হয়।

করোনাভাইরাস ঠেকাতে গত বছরের এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে ভোমরা ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট। এর আগে প্রায় এক হাজার যাত্রী প্রতিদিন ভোমরা বন্দর দিয়ে যাতায়াত করতেন। চিকিৎসা, ব্যবসা, কেনাকাটা ও পর্যটনের প্রয়োজনে এসব ব্যক্তিরা ভারতে যেতেন।

সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে ইছামতি নদীতে বিজিবির টহল নৌকা

সীমিত সংখ্যক ভারতীয় ব্যবসার জন্য অথবা আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে আসতেন। এক বছরেরও বেশি সময় ভোমরা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে এ অঞ্চলের নাগরিকদের। চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া ব্যক্তিদের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। ভোমরা হয়ে যেতে না পেরে বাধ্য হয়ে বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাচ্ছেন তারা।

ভোমরা ইমিগ্রেশন পুলিশের কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট বন্ধ থাকলেও পণ্যবাহী ট্রাকের ভারতীয় চালকদের যাতায়াত রয়েছে। তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যাতায়াত করেন।’

এ বিভাগের আরো খবর