ঠাকুরগাঁওয়ের একটি গ্রামে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তবে জানা যায়নি আগুন লাগার কারণ।
গ্রামবাসীর ধারণা, অলৌকিকভাবে লাগছে এসব আগুন। ভয়ে দিন পার করছেন তারা।
তবে প্রশাসনের দাবি, কেউ বা কারা ইচ্ছা করে এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে।
জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের সাবাজপুর গ্রামের মসসেদ আলী জানান, গত ২৯ মার্চ শবে বরাতের রাতে মফিজুল হকের বাড়িতে প্রথম আগুনের ঘটনা ঘটে। ওইদিন তেমন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও পরদিন ৩০ মার্চের আগুনে তিনটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এরপর থেকে গ্রামের এখানে সেখানে আগুন লেগেই চলেছে। কখনো কারও রান্নাঘরে, কখনো কাপড়ের ট্রাংকে, কখনো কারও ঘরের চালায়।
আমেনা বেগম জানান, ভয়ে দুই সন্তানকে রেখে এসেছেন বাবার বাড়ি। পালা করে বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন যাতে আগুন লাগলে কিছু আসবাব দ্রুত বাঁচানো যায়।
তার মতো অনেকেই সন্তানদের অন্য গ্রামে আত্মীয়দের বাড়িতে রেখে এসেছেন।
সবশেষ গত শনিবার এই গ্রামের মো. কমিরুদ্দিনের বাড়িতে তিনবার আগুন লাগে। ভোরবেলা ও সকালে আগুন দেখা যায় ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করা প্লাস্টিকের ড্রামের ভেতর আর দুপুরে গোয়ালঘরে।
স্থানীয় মোতালেব হোসেন জানান, এই সমস্যার সমাধানে গ্রামে বেশ কয়েকজন তান্ত্রিক নিয়ে এসেছিলেন। তাদের মতে, ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ওপর কেউ কালাজাদু করেছে। সেই কালাজাদু কাটাতে তারা বিভিন্ন রকম তন্ত্র-মন্ত্রের চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি কোনো।
শেষে আগুন নেভানোর জন্য এলাকাবাসী বসিয়েছে পাঁচটি পানির পাম্প।
এ বিষয়ে উপজেলার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা হাবিবুল বাশার নিউজবাংলাকে জানান, অসতর্কতার কারণে আগুন লাগছে। ওই পরিবারগুলোকে এক মাস মনিটর করা হবে। সঠিকভাবে মনিটর করা হলে আগুন লাগার কারণ বের করা যাবে।
এখানে অলৌকিক কোনো বিষয় থাকার ধারণাকে ভিত্তিহীন মনে করেন এই কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) যোবায়ের হোসেন জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুকনো খাবার, কম্বল ও অন্যান্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে এই বিষয়ে নজরদারি করতে বলা হয়েছে।
ইউএনও বলেন, ‘পরিবারগুলো অলৌকিক আগুন দাবি করলেও বিষয়টি আমরা ভিন্নভাবে দেখছি। ধারণা করছি, একটি চক্র ষড়যন্ত্র করে পরিবারগুলোর মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। জড়িতদের সন্ধান পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’