সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় স্কুলছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন ও অ্যাসিডে মুখ ঝলসে দেয়ার হুমকির অভিযোগে মামলার পর আলোচনায় আসা সোহেল মিয়া নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা দাবি করলেও, তিনি সংগঠনটির কর্মী বলে জানা গেছে।
সোহেল নিজেকে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক দাবি করলেও ওই কমিটির সাবেক নেতারা বলেছেন এটি ভুয়া। নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে ২০১০ সালে ১০ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেন তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হাসান রিপন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন। কমিটির সভাপতি করা হয়েছিল ফজলে রাব্বি স্মরণকে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় রফিক আহমেদ চৌধুরীকে। পরে ২০১৪ সালে ১২১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কয়েকটি নাম নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এর মধ্যে সোহেলের নামটিও ছিল।
২০১৭ সালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফজলে রাব্বী স্মরণ পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে লেখা সুহেল নামটিকে সুহেল রানার বলে জানান নেতা-কর্মীদের। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন সোহেল মিয়া ও সুহেল রানা দুজনই পদ হিসেবে ব্যবহার করছেন যে তারা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক। এ ছাড়া এসএম সুহেলও সাবেক সহসম্পাদকের পদ ব্যবহার করেন।
দিরাইয়ে স্কুলছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন ও অ্যাসিড দিয়ে মুখ ঝলসে দেয়ার হুমকির ঘটনায় মামলার পর আলোচনায় আসা সোহেল মিয়া দিরাই সরকারি কলেজ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক পদ ব্যবহার করেন। তবে ২০০৯ সালের পর কোনো কলেজ কমিটিই অনুমোদন হয়নি। সাবেক নেতাদের অভিযোগ, জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি দিপঙ্কর কান্তি দে বলয়ে কাজ করছেন এই সোহেল।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘সোহেল মিয়াকে আমি চিনি না। তা ছাড়া এসএম সুহেলকে জেলা কমিটির সাবেক সহসম্পাদক বলে আমি জানি।’
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফজলে রাব্বী স্মরণ বলেন, ‘সোহেল নাম নিয়ে কিছুটা বিতর্ক হয়েছিল। একজন আমার বন্ধু সুহেল। আরেকজন আমার ছোট ভাই সুহেল। তবে বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। এখানে কোনো সোহেল মিয়ার নাম ছিল না। কমিটিটা ২০১০ সালের এবং পূর্ণাঙ্গ ২০১৪ সালে, ওই সময় তার বয়সটাই কী ছিল! দিরাই সরকারি কলেজে ২০০৯ সালের পর কোনো কমিটিই দেয়া হয়নি, তাহলে সে কীভাবে বলে সহসম্পাদক?’ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দিপঙ্কর কান্তি দে বলেন, সোহেল মিয়াকে তিনি চেনেন। তবে আগের কমিটিতে সোহেল কিছু ছিলেন কি না, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
তিনি বলেন, ‘সোহেল মিয়া ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় সদস্য। আমি যতটুকু জানি, ঘটনার সময় সে দিরাইয়েই ছিল না। সিসিটিভি ফুটেজেও আমি তাকে খুঁজে পাইনি। কেউ যদি ষড়যন্ত্র করে ফাঁসাতে চায়, তাহলে আমি বলব ঘটনার সঠিক তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনা হোক।’
বৃহস্পতিবার দিরাই থানায় সোহেল মিয়া ও জেলা পরিষদের সদস্যের ছেলে অভির নামে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা মামলা করেন। এর পর থেকে সোহেল ও অভি পলাতক। তাই তাদের মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।