রাজশাহী নগরীর একটি বাড়িতে তৈরি হচ্ছিল বিভিন্ন কোম্পানির প্রচলিত নকল ওষুধ। বাজারজাত করা হচ্ছিল বিশেষ কৌশলে। মোড়ক একরকম হওয়ায় ক্রেতার পক্ষে চেনার উপায় ছিল না ওষুধগুলো নকল।
রোগীর জন্য ফার্মেসি থেকে এসব ওষুধ কিনে উপকার পাচ্ছিলেন না মানুষ। এমন সূত্র ধরেই রাজশাহী মহানগর পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে কারখানা মালিককে। তার বাড়ি থেকেই জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ।
পুলিশ জানায়, রাজশাহী মহানগর পুলিশের একটি দল শুক্রবার রাতে অভিযান চালায় নগরীর ভদ্রা জামালপুর এলাকায়। সেখানে একটি বাড়িতে পাওয়া যায় নকল ওষুধ তৈরির কারখানা। গ্রেপ্তার করা হয় কারখানার মালিক শফিকুল ইসলাম ওরফে আনিসকে। ৪২ বছর বয়সী আনিসের সহযোগী রবিউল ইসলামকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ ও ওষুধ তৈরির সরঞ্জাম। যার আনুমানিক মূল্য ৭১ লাখ টাকা বলে দাবি করেছে পুলিশ।
নকল ওষুধ আটকের বিষয়ে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। মহানগর ডিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, প্রায় দুই বছর আগে নগরীর ভদ্রা জামালপুর এলাকায় নিজ বাড়িতেই নকল ওষুধ তৈরির কারাখানা স্থাপন করেন আনিস। এরপর তারা বাজারে প্রচলিত নামি কোম্পানির বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ বাজারজাত করেছে। রাজশাহীসহ বিভিন্ন বাজারে এখনো অনেক নকল ওষুধ বিভিন্ন দোকানে রয়েছে। তা জব্দ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জব্দ করা নকল ওষুধের মধ্যে রয়েছে স্কয়ার কোম্পানির ১৮৬৪ প্যাকেট সেসেলো, ৬ বক্স সেকলোর মোড়ক, এসবি ল্যাবরেটরিজের ৭৬৯ প্যাকেট পাওয়ার-৩০ (মোড়কসহ), ৫১৮৮ প্যাকেট পাওয়ার-৩০ (মোড়কছাড়া), ৬৫ পাতা পাওয়ার-৩০ (সবুজ রং), পাওয়ার-৩০ তৈরির ১৬ কেজি উপাদান, নাভানা কোম্পানির ১৩৫৬ পাতা পিজোফেন, রিলায়েন্স কোম্পানির ১২৫ পাতা ইলিক্সিম ও রিলায়েন্স কোম্পানির ২২ পাতা রিলাম।
এ সময় ভেজাল ওষুধ তৈরির মেশিন বিলিস্টার জব্দ করা হয়।
নামিদামি কোম্পানির মোড়কে তৈরি হচ্ছিল নকল ওষুধ। ছবি: নিউজবাংলা
রাজশাহী মহনগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ‘পুলিশের কাছে গোপন সংবাদ ছিল রাজশাহীতে নকল ওষুধ তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই বিষয়ে তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের পাশাপাশি নকল ওষুধের কারখানার অনুসন্ধান চলছিল।
‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ভুক্তোভোগীদের মাধ্যমে জানা যাচ্ছিল বাজারে নকল ওষুধের তথ্য। বাজার থেকে কিনে ওষুধ খেয়ে রোগীরা সুস্থ না হয়ে বরং আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। তথ্য যাচাইয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরে শুক্রবার রাতে ভদ্রা আবাসিক এলাকায় অভিযান চলে। নকল ওষুধ যেগুলো বাজারে আছে সেগুলো বাজার থেকে উত্তোলনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’