বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন্যহাতির আক্রমণে দিশেহারা কৃষক

  •    
  • ২৪ এপ্রিল, ২০২১ ০০:৫৬

‘বিকাল অইলে আমগর এইদিহি আস্তে আস্তে পাহাড় থাইকা নিচে নামতে থাহে হাতির দল। দুই রাতে আমার জমিনের পাহা ধান পারাইয়া শেষ কইরা হারছে। মশাল জ্বালাইয়াও এগরে খেদাইন যাইতাছে না। অহন আমরা নিরুপায়।’

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি গ্রামগুলোতে বন্যহাতির পাল তাণ্ডব শুরু করেছে। বাড়িঘর ও ফসলি জমিতে আক্রমণ চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করছে কৃষকদের।

ফসল রক্ষায় মশাল জ্বালিয়ে, ঢুল ডগ্গর বাজিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী।

উপজেলার ডালুকোনা ও খলচান্দা এলাকার পাহাড়ের টিলা থেকে সন্ধ্যা হলেই নেমে আসে পাকা ধান খেতে। বোরো ফসল রক্ষায় এলাকাবাসী হাতি তাড়াতে মশাল জ্বালিয়ে নিজের জমিতে অবস্থান করেন।

খলচান্দা গ্রামের পরিমল কোচ জানান, বর্তমানে পাহাড়ের সমতলে বোরো ধান পাকা শুরু হয়েছে। প্রতিবছরই ধান ও কাঁঠাল পাকার মৌসুমে হাতির পালটি সন্ধ্যার দিকে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসে।

গত বুধবার সন্ধ্যায় ২০-২৫টি বন্যহাতির পাল উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামের ডালুকোনা এলাকার পাহাড় ধান ক্ষেতে নেমে আসে। তখন এলাকাবাসীরা মশাল জ্বালিয়ে এবং হইহুল্লুড় করে হাতি তাড়ায়।

আন্ধারুপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিনে হাতি আমার ধান খাবার না পাইলেও ধান ক্ষেত মাড়ায়া পাহা ধান গুইলা শেষ কইরা দিছে।’

একই গ্রামের হাসু মিয়া বলেন, ‘বিকাল অইলে আমগর এইদিহি আস্তে আস্তে পাহাড় থাইকা নিচে নামতে থাহে হাতির দল। দুই রাতে আমার জমিনের পাহা ধান পারাইয়া শেষ কইরা হারছে। মশাল জ্বালাইয়াও এগরে খেদাইন যাইতাছে না। অহন আমরা নিরুপায়।’

পোড়াগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বন্ধনা চাম্বু গং বলেন, ‘দুই দিন ধরে আমাদের ঘুম নাই। সন্ধ্যা হলে ফসল রক্ষার জন্য লোকজন নিয়ে মশাল জ্বালিয়ে ক্ষেতেই রাত কাটাই। ধান পাকলেই প্রতি বছর বন্যহাতির হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে আমাদের এভাবেই পাহারা দিতে হয়। দিনের বেলা হাতিগুলো সীমান্তের শূন্যরেখায় পাহাড়ে অবস্থান করে আর সন্ধ্যা হলেই সমতলে ধান খেতে নেমে আসে।’

স্থানীয় পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজাদ মিয়া জানান, প্রায় ২০ বছর আগে বন্যহাতির দল ভারতের মেঘালয়ের পিক পাহাড় থেকে দলছুট হয়ে বাংলাদেশের গারো পাহাড়ে চলে আসে। ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বাধার কারণে হাতিগুলো আর আবাসস্থলে ফিরে যেতে পারেনি। প্রথম দিকে গারো পাহাড়ে অবস্থান নেওয়া ওই হাতির সংখ্যা ছিল ২০-২৫টি। বর্তমানে এ সংখ্যা ৫০-৬০টির বেশি।

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হেলেনা পারভীন বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে আমি এলাকা পরিদর্শন করেছি। বন্যহাতি তাড়ানোর জন্য মশাল জ্বালাতে ৫১ জনের মাঝে ইতিমধ্যে ৫ লিটার করে কেরোসিন তেল বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাও করা হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর