বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনায় টিউশনি হারিয়ে ইফতারি বিক্রি

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৩ এপ্রিল, ২০২১ ২২:১৭

ঢাকা কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শামীম আলম। করোনার থাবায় টিউশনি হারিয়ে ইফতারি বিক্রি করছেন নিজ এলাকার বাজারে। কৃষক বাবাকে এভাবে সহযোগিতা করতে পেরে শামীম গর্বিত।

কৃষক পরিবারের সন্তান শামীম আলম পড়ছেন ঢাকা কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগে। অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শামীম এখন ইফতারি বিক্রি করছেন নিজ এলাকা ময়মনসিংহরে গৌরীপুর নহাটা বাজারে। করোনার প্রভাবে টিউশনি হারাতে হয়েছে তাকে। কিন্তু জীবন থেমে নেই, পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দিতেই শামীমের এ উদ্যোগ।

স্বজনরা জানান, ময়মনসিংহের গৌরীপুর মাওহা ইউনিয়নের নহাটা গ্রামের দরিদ্র কৃষক হাবিব উল্লাহর বড় ছেলে শামীম। আর্থিক সংকটে ছোট ভাই ময়মনসিংহের একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করছেন। এক বোন নবম শ্রেণীতে, আরেক বোন নার্সারিতে পড়ছে। এ অবস্থায় সংসারের আশার আলো শামীম নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নেন টিউশনি করে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে পরিস্থিতি এখন বেসামাল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, টিউশনি বন্ধ। তাই গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছেন শামীম। পরিবারের অভাব অনটন দেখে শুরু করেছেন ইফতারসামগ্রী বিক্রির কাজ। যে টাকা লাভ হয় তা দিয়ে পরিবারকে সামান্য হলেও সাহায্য করতে পারছেন। এতেই সন্তুষ্ট শামীম।

শুক্রবার বিকেলে গৌরীপুর নহাটা গ্রামের নহাটা বাজারে টেবিলের ওপর ছোলা, মুড়ি, বুন্দিয়, পেঁয়াজু, বেগুনি বিক্রি করতে দেখা যায় শামীমকে।

নিউজবাংলাকে শামীম বলেন, ’অনার্সে ভর্তি হওয়ার পর বাবা পড়াশানার খরচ দিতে পারতেন না। তাই খরচ জোগাতে ৮ হাজার টাকায় দুটি টিউশনি শুরু করি। গত বছর করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে কলেজ বন্ধের পাশাপাশি টিউশনিও চলে যায়। তখন গ্রামের বাড়িতে চলে আসি। গ্রামের বাজারে অন্যের দোকানে বসে কম্পিউটারে চাকরির আবেদন, কলেজে শিক্ষার্থীদর ভর্তির আবেদন, লেখা কম্পোজসহ বিভিন্ন কাজ করেছি। এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। উপায় না পেয়ে ২ হাজার ৭শ' টাকা দিয়ে রমজান মাসে নিজের গ্রামে ইফতারি বিক্রির দোকান দিয়েছি।’

শামীম বলেন, ’ইফতারি সামগ্রীগুলো বাসা থেকে বানিয়ে বাজারে নিয়ে আসি। প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২ শ টাকার ইফতারি বিক্রি হয়। এতে লাভ হয় প্রায় তিন শ টাকা। এ কাজে লজ্জা নেই। সৎ পথে থেকে পরিবারকে সাহায্য করতে পেরে ভালো লাগছে।’

ছেলেকে নিয়ে গর্ববোধ করেন কৃষক হাবিব উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এই বয়সটাতে অনেক ছেলে টাকা কামানোর নেশায় অবৈধ পথে চলে যায়। আমরা গরিব পরিবার, তবে ছেলেমেয়েদের ছোট থেকেই ভালো মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিয়েছি। বড়লোক হওয়ার চেয়ে সৎপথে থেকে ভালো মানুষ হওয়া জরুরি।’

এ বিভাগের আরো খবর