বাবা-মা দুজনই কর্মজীবী। আট বছর বয়সের একমাত্র ছেলে পড়ত স্থানীয় একটি মাদ্রাসায়। বাবা-মা কাজে গেলে বাসায় একাই থাকত সে। কাজ থেকে ফিরে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলেকে কোথাও খুঁজে পাননি মা। রাতে ঘরের টয়লেটের ফলস ছাদের ভেতরে পাওয়া যায় তার মরদেহ।
ঘটনাটি সাভারের আশুলিয়ার বুড়ির বাজার এলাকার। সেখানকার একটি ছয়তলা ভবনের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাট থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উদ্ধার করা হয় শিশু সাজ্জাদ হোসেনের মরদেহ।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুর রশিদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাজ্জাদের বাবা ইউসুফ আলী ইলেকট্রনিকসের স্থানীয় একটি দোকানের কর্মচারী, মা খাদিজা বেগম স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক। সন্তানকে নিয়ে তারা ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।
তাদের পাশেই আরেকটি ভবনে ভাড়া থাকেন খাদিজার ভাই সোহেল আহমেদ। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বাবা-মা কাজে গেলে আমার ভাগিনা সাজ্জাদ একাই থাকত বাসায়। বেলা সাড়ে ৩টায় ওর মা বাসায় আইসা দেখে বাইরে দিয়া দরজায় তালা লাগানো। তখন ওরা (সাজ্জাদের বাবা-মা) মনে করছে, হয়তো বাইরে সাজ্জাদ নামাজ পড়তে গেছে, না হয় মাদ্রাসায় খেলতে গেছে।
‘চারদিক অনেক খোঁজখবর নিয়া ওরে পাওয়া যায় নাই। পরে ওর বাবা-মা দরজা খুইলা দেখে যে, শোকেসের দরজা একটু খোলা। তখন দেখে টাকাপয়সা আর গয়না নিয়া গেছে। তখন টয়লেটের ফলস ছাদের ডোরটা ওপেন দেখে ওদের আরও সন্দেহ লাগল। ওই ডোরটা খোলার পরে দেখল যে লাশটা প্যাকেট করা অবস্থায় আছে।’
সাজ্জাদের বাবা ইউসুফ বলেন, ‘আমার ওয়াইফ ওরে (সাজ্জাদকে) না পেয়ে কানতে কানতে ওপরে ওইঠা তালা খুলে ভিতরে ঢুকছে… রুমের শোকেসটার দরজা ওয়াইফ দেখছে একটু ফাঁকা। ওটা টান দিয়া দেখছে ভিতরে যে টাকা আর গয়নাগুলো ছিল, সেগুলা নাই। পরে আমি গিয়ে দেখি যে টয়লেটের উপরে ফলস ছাদের দরজাটা খোলা। ওইটার ভিতরে আমার ছেলেটা শুইয়া রইছে। চুরি হইছে ২০-২৫ হাজার টাকা আর স্বর্ণ ছিল এক ভরির মতো।’
ইউসুফ জানান, তিনি কাউকে সন্দেহ করতে পারছেন না। তবে পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা নাজমুল হোসেনের স্ত্রী লতা আগের দিন তার বাসায় গল্প করতে এসেছিলেন বলে তিনি জানান।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক আব্দুর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শিশুর পরিবারের অভিযোগ, কিছু টাকা ও স্বর্ণালংকারও খোয়া গেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতিবেশী নাজমুল হোসেন ও আল আমিন গাজীকে থানায় নেয়া হয়েছে।