লকডাউন শুরুর পর থেকে সরকারি নির্দেশনায় বন্ধ দোকানপাট, রেস্তোরাঁ। কিন্তু পণ্য পরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলছে সড়কে। পাশাপাশি সড়কে দেখা মিলছে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষসহ আগন্তুকদের। সেহরিতে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
এই অবস্থায় প্রথম রোজা থেকেই নিজেদের উদ্যোগে এসব মানুষের কাছে ফেরি করে সেহরি পৌঁছে দিচ্ছেন ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
বুধবার রাতে সাভারের থানা রোড এলাকায় সড়কে ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নিরাপত্তাপ্রহরীসহ ছিন্নমূল মানুষের মাঝে সেহরি বিতরণ করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পিকআপে আনা প্যাকেটজাত সেহরি তারা মানুষদের হাতে তুলে দেন।
সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে গত কয়েক দিন ধরেই সেহরি বিতরণ করছেন তারা।
সেহরি পেয়েছেন থানা রোড এলাকার নিরাপত্তাপ্রহরী নাদের আলী।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘লকডাউন আর রোজা দুইডাই একলগে শুরু হইছে। এরপর থাইকা আমাগো কষ্টও বাইড়া গেছে। লকডাউনের কারণে সেহরির সময় দোকানপাট সব বন্ধ থাকায় রোজা রাখাটা অনেক কষ্ট হইয়া যায়।
‘বাসা থাইকা সেহরি নিয়া আসলে গরমের কারণে আবার নষ্ট হইয়া যায়। কিন্তু কয়দিন ধইরা পোলাপানগুলা আমগো সেহরি দিয়া যাইতেছে গরম গরম। রাইতের বেলা এমন খাবার পাইয়া সত্যিই আমার অবাক হইয়া গেছি।’
ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাভারের সড়ক-মহাসড়কে সারা রাতই পেটের তাগিদে ঘুরে ফেরেন নিম্ন আয়ের মানুষ, পরিবহন শ্রমিকরা। সচ্ছল পরিবারের অনেক লোকজনকেও ব্যক্তিগত কিংবা অফিশিয়াল কাজে সড়কে চলাফেরা করতে দেখা যায়। তাই আমরা জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসব মানুষকে সেবা দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে ফান্ড কালেক্ট শুরু করি।
‘প্রথম রোজা থেকেই আমরা পিকআপে সেহরি নিয়ে সাভারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ঘুরে ঘুরে বিতরণ করছি।’
এই ছাত্রলীগ নেতা জানান, সেহরির খাবার তারা নিজেরাই রান্না করে প্যাকেটজাত করেন। আর এতে সাধ্যমতো সবাই হাত লাগান। ফলে কাজ শেষ হয়ে যায় দ্রুতই।
সাইদুল বলেন, ‘কষ্ট হলেও সবাই মিলে এমন কাজে অংশ নিতে পেরে আমাদের অনেক ভালো লাগছে। তবে এভাবেই সমাজের উচ্চবিত্তরা যদি অসহায়দের পাশে দাঁড়ান, তাহলে হয়তো এই লকডাউনে অসহায় মানুষদের কষ্ট অনেকটাই লাঘব করা সম্ভব।’