বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কেমন আছে দৌলতদিয়ার যৌনকর্মীরা

  •    
  • ২১ এপ্রিল, ২০২১ ১৮:১৯

‘একজনের কাছ থেইকা পাঁচশত টাকা কজ্জো (ধার) করে দুই কেজি চাল, ডাল ও তরকারি কিনে খাইছি। কিন্তু এম্মা আর কয়দিন চলবো জানি নে। করোনায় না মরলিও খিদের জ্বালায় ঠিকই মরবোনে।’

‘দুই, তিনদিন না খাইয়ে আছি। লকডাউনে যদি কোনো লোক না ঢোকে তাইলে আমরা কামাই করবো কেম্মা আর খাবোই কী?’

কথাগুলো বলছিলেন রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার বেলি। তিনি নিউজবাংলাকে আরও বলেন, ‘একজনের কাছ থেইকা পাঁচশত টাকা কজ্জো (ধার) করে দুই কেজি চাল, ডাল ও তরকারি কিনে খাইছি। কিন্তু এম্মা আর কয়দিন চলবো জানি নে। করোনায় না মরলিও খিদের জ্বালায় ঠিকই মরবোনে।’

বেলির মতোই করোনায় শোচনীয় দিন কাটাচ্ছেন হামিদা। তিনি বলেন, ‘ঘরে চাউল নাই, ডাল নাই, এক বেলা খাইলে আরেক বেলার খাবার থাকে না। কোনো খদ্দের আসতেছে না। বাচ্চারা খিদার জ্বালায় কাঁদে। এর সাথে আবার আছে ঘর ভাড়ার দেনা।’

বেলি, হামিদা দুজনই দেশের সবচেয়ে বড় যৌনপল্লির যৌনকর্মী।

এই যৌনপল্লিতে গিয়ে দেখা যায়, কোথাও কোনো ভিড় নেই, কর্মব্যস্ততা নেই। চারদিকে শুনসান নীরবতা।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন জারি করে সরকার। এরপর ১৪ এপ্রিল থেকে চলছে কঠোর বিধিনিষেধ।

কঠোর বিধিনিষেধের ১৩ নির্দেশনা অনুযায়ী, সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে।

নির্দেশনা অনুযায়ী বন্ধ আছে যৌনপল্লিও। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এই পল্লির কেউ বাইরে যেতে পারবে না। ভেতরেও যাওয়া বন্ধ বাইরের লোকের।

দৌলতদিয়ার যৌনপল্লিতে প্রায় দুই হাজার যৌনকর্মীর বাস। তাদের রোজগারের একমাত্র পথ দেহ ব্যবসা কঠোর বিধিনিষেধের কারণে বন্ধ। তাই পড়েছেন চরম অর্থসংকটে।

কয়েকজন যৌনকর্মী জানান, গত বছর সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা পেলেও এবার তেমন কোনো সহযোগিতা তারা পাননি। জমানো টাকা দিয়ে পার করেছেন এই কয়দিন।

এখন হাত একেবারে খালি। দিনে অন্তত একবেলার খাবার জোগাড় করাই হয়ে গেছে জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

অসহায় নারী ঐক্য সংগঠনের নেত্রী ঝুমুর বেগম বলেন, ‘আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করে থাকেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান স্যার। রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান স্যার এবং গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্যার আবদুল্লাহ আল তায়েবি আশ্বস্ত করেছেন ত্রাণ দিবেন। কিন্তু কবে দিবে সেটা জানি না।

‘গত বছরের লকডাউনে এই পল্লির বাসিন্দাদের খাবারের কোনো কমতি ছিল না। এ বছর একটি সংগঠন থেকে দুই শত মানুষের জন্য ত্রাণ পেয়েছি। যেটা একেবারেই অল্প। কারণ, এখানে দুই হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। এরপর যদি লকডাউনের সময় আরও বাড়ে তাহলে আমারা করোনায় মরবো না, আমরা না খেয়ে মারা যাবো।’

গোয়ালন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি মোস্তফা মুন্সী জানান, সরকারি যে ত্রাণ গতবছরের লকডাউনে এসেছিল তার থেকে দৌলতদিয়ার যৌনকর্মীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এবারও তাদের সহযোগিতা করার জন্য তালিকা করা হচ্ছে। তালিকার কাজ শেষ হলেই তাদের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর