বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লকডাউনে পশুর খামারিদের মাথায় হাত

  •    
  • ২১ এপ্রিল, ২০২১ ০৮:৫০

‘গরুর দাম শুইনি মাথা খারাপ হয়ি যাইছে। আমার ৯০ হাজার টেকার গরুর দাম বুলছে ৭২ হাজার টেকা।… আজ দুই হাট হলো জেলার বাইরের কোনো ব্যাপারী আসেনি। তাই ছাগল বেচতে পারছিনি। খুব বিপদে আছি ভাই। আল্লায় জানে করোনা কবে সারবে।’

মেহেরপুরে গরু-ছাগলের হাটে হঠাৎ দরপতনে দুশ্চিন্তায় গরু-ছাগল পালনকারী ও খামারিরা।

গরুভেদে দাম কমেছে ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ছাগলের ক্ষেত্রে কমেছে দুই থেকে তিন হাজার টাকা।

ব্যবসায়ী ও হাট ইজারাদাররা বলছেন, জেলার বাইরের ব্যাপারীরা আসতে না পারার কারণে এমনটি ঘটছে।

জেলায় গরু-ছাগল মোটাতাজা করে বিক্রি করার প্রবণতা গত কয়েক বছরে বেড়েছে। এই কাজে যারা আয় করেন, তাদের সংখ্যাটি নেহাত কম নয়। তাদের মধ্যে যারা এখন পশু বিক্রি করতে যাচ্ছেন, লোকসান হচ্ছে তাদের সবার।

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কমে যাওয়ায় আয় কমে গেছে বহুজনের। যারা আয় করে পশুর জন্য খাবার নিতেন, তারা এখন সেটি পারছেন না। এ কারণে গরু বিক্রি করতে হাটে নিয়ে হতবাক হয়ে যাচ্ছেন। গরুর দাম শুনে হতাশ হতে হচ্ছে তাদের।

যে গরুর দাম সপ্তাহ দুয়েক আগেও ব্যাপারীরা দিতে চেয়েছিলেন এক লাখ টাকা, সেটির দাম এখন তারা বলছেন ৮০ হাজার টাকা।

এক গরু মালিক বললেন, কয়েক দিন আগেও তার পশুর দাম বলা হয়েছিল ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এখন দাম বলছে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

ইজারাদারও যে ভালো আছেন, তা নয়। মেহেরপুরের সবচেয়ে বড় বামন্দী পশুহাট ইজারাদার নাসির উদ্দীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা হাটটি বছরে ৩ কোটি ৪২ লাখ টাকায় ইজারা নিয়ে থাকি। সপ্তাহে সোমবার ও শুক্রবার হাট বসিয়ে থাকি। যেখানে প্রতি হাটেই কমপক্ষে দুই হাজার গরু ও আড়াই হাজার ছাগল ওঠে, সেখানে এখন গরু উঠছে সাত শর মতো। ছাগল দেড় হাজারও উঠছে না।

‘দাম কমে গেছে, ক্রেতা নেই। হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে খামারি ও পশু পালনকারীদের। আমরা চিন্তায় আছি হাট ইজারার টাকা ওঠা নিয়ে।’

খামারি আবদুল জাব্বার নিউজবাংলাকে জানান, ‘আমার খামারে ১২ থেকে শুরু ১৭ মণ ওজনের গরু আছে ২০টি। এক একটি গরু ১৮ কেজি করে খাবার খায়। হঠাৎ আমার টাকার দরকার হয়ে পড়ায় আমি একটি গরু বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছি। তবে দাম শুনে আমি হতভম্ভ হয়ে গেছি।

‘যে গরুটি কিছুদিন আগেই দাম বলেছিল ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা আর আজ দাম বলছে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তা-ও ক্রেতা কম। দুইজনে শুধু এই দাম দিতে চেয়েছে।’

কালু মিয়া ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করেন বর্গা নিয়ে চাষাবাদের পাশাপাশি দুটি গরু বড় করছেন।

জমি বর্গা নিতে টাকা দরকার। তাই গরু নিয়ে আসেন হাটে। বলেন, ‘গরুর দাম শুইনি মাথা খারাপ হয়ি যাইছে। আমার ৯০ হাজার টেকার গরুর দাম বুলছে ৭২ হাজার টেকা। তাই এ বছর ধারদেনা কইরি অথবা বাকি জমি বর্গা নিতে হবে। তা ছাড়া উপায় দেখছিনি।’

ছাগল বিক্রেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দুইজন শেয়ারে ব্যবসা করি। গ্রামের হাট থাইকি ২০ থেকে ২৫টি ছাগল কিনি। তারপর ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামের ছাগলের ব্যাপারী দেখে লাভে বিক্রি করি। আজ দুই হাট হলো জেলার বাইরের কোনো ব্যাপারী আসেনি। তাই ছাগল বেচতে পারছিনি। খুব বিপদে আছি ভাই। আল্লায় জানে করোনা কবে সারবে।’

এ বিভাগের আরো খবর