গাইবান্ধা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মজিবর রহমান ও এএসআই মোশাররফ হোসেনকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে তাদের প্রত্যাহার করা হয়। অপহৃত পাদুকা ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ ছিল এ দুজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দায়িত্ব অবহেলার কারণে দুই পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে ওসির কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।’
পুলিশ জানায়, গাইবান্ধায় অপরণের শিকার হয়েছিলেন জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী। তাকে উদ্ধারের পর ফের অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার জিম্মায় তুলে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পরে ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার হয় অপহরণকারীর বাড়ি থেকে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার কর্তব্য অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। সে কারণে অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহারসহ থানার ওসি মাহফুজার রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন পুলিশ সুপার।
জেলা শহরের থানাপাড়া এলাকার জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীকে গত ৫ মার্চ লালমনিরহাট থেকে অপহরণ করেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানা। ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
হাসান আলীকে উদ্ধারের দাবিতে তার স্ত্রী বিথী বেগম গাইবান্ধা সদর থানায় অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ সদর উপজেলার বল্লমঝার ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামে মাসুদ রানার বাড়ি থেকে হাসান আলীকে উদ্ধার করে। এরপর হাসান আলীকে ফের অপহরণকারী মাসুদ রানার জিম্মায় দিয়ে দেয় পুলিশ। গত ১০ এপ্রিল মাসুদ রানার বাড়ি থেকেই পাদুকা ব্যবসায়ী হাসান আলীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়।
মৃত্যুর আগে ব্যবসায়ী হাসান আলী মোবাইল ফোনে তার স্ত্রীর কাছে বেশ কয়েকটি ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। সেই বার্তায় অপহরণ ও নির্যাতনের কথা উল্লেখ রয়েছে। ঘটনার জন্য মাসুদ রানাসহ দুজন ব্যবসায়ীকে দায়ী করা হয়।
হাসান আলীর মরদেহ উদ্ধারের পর স্ত্রী বিথী বেগম সদর থানায় মামলা করেন। আসামি করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানা, পাদুকা ব্যবসায়ী রুমেন হক ও খলিলুর রহমান বাবুকে। এজাহারে থানার দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ আনা হয়।
মরদেহ উদ্ধারের দিন পুলিশ অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানাকে আটক করে। পরদিন তাকে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।