বরগুনায় তরমুজ পরিবহনের সময় চাাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। ক্ষেত থেকে তরমুজ কিনতে আসা পাইকাররা চাঁদা না দিয়ে ফিরতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের পরীরখাল এলাকায় চলছে অভিনব চাঁদাবাজি। ট্রাক্টর প্রতি দুটি তরমুজ চাঁদা হিসেবে ছিনিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় কয়েকজন। এ বিষয়ে পাইকারদের কয়েকজন পুলিশের কাছে অভিযোগ করে প্রতিকার পাননি।
তরমুজ কিনতে আসা পাইকার লিটন বেপারী বলেন, ‘টাফি (পরিবহন ট্রাক্টর) থেকে ট্রাকে তরমুজ লোড করার সময় স্থানীয় কয়েকজন চাঁদা দাবি করেন। মনির হোসেন ও মিলন নামের দুজন ব্যক্তি টাফি প্রতি দুটি করে তরমুজ নিয়ে নেন। তরমুজ দিতে অস্বীকার করলে তারা হুমকি দিচ্ছেন।’
কয়েকজন পাইকার জানান, তারা বরিশালের বানরিপাড়া উপজেলা থেকে এসেছেন। বরগুনার এম বালিয়াতলী এলাকায় বেশ কয়েকটি তরমুজের ক্ষেত তারা কিনে নিয়েছেন। এসব তরমুজ মাঠ থেকে টাফিতে করে সড়কের কাছে ট্রাকে লোড করা হয়। ট্রাকে তরমুজ লোড করার সময় ওই এলাকায় কয়েকজন ব্যক্তি তাদের ক্রয় করা তরমুজ থেকে জোর করে টাফি প্রতি দুটি করে তরমুজ চাঁদা হিসেবে নিয়ে নেন।
আকরাম হোসেন নামের এক পাইকার বলেন, ‘আমরা এখান থেকে ৩০ লাখ টাকায় তরমুজের ক্ষেত কিনেছি। এসব তরমুজ ট্রাকে করে ঢাকার গাজীপুর এলাকায় নিয়ে বিক্রি করা হবে। কিন্তু স্থানীয় কিছু লোকজন চাঁদা হিসেবে জোর করেই আমাদের গাড়ি থেকে তরমুজ নিয়ে যায়। আমরা দূরের মানুষ, তাদের কাছে একপ্রকার জিম্মি ও অসহায়।’ একই অভিযোগ করেন পাইকার ইব্রাহীম, সাইফুল, রহিম ও ইমরান।
অভিযুক্ত মনিরের সঙ্গে যোাগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের জমি ব্যবহার করে তরমুজ লোড দেয়া হয়, এতে আমাদের জমির ক্ষতি হয়। যে কারণে ক্ষতিপূরণ বাবদ তাদের কাছ থেকে তরমুজ চেয়েছিলাম। এটা জোর জবরদস্তি নয়, ক্ষতিপূরণ দাবি।’
তবে স্থানীয় কয়েকজন তরমুজ চাষি জানান, যেখানে ট্রাক লোড করা হয় সেই জমি মনির বা মিলনের না, জমির মালিক লিটন নামের একজন। তিনি এসবের সঙ্গে জড়িত নন। পাইকাররা দূর দূরান্ত থেকে এসেছেন। তারা ট্রাক লোড করার সময় মনির, মিলনসহ কয়েকজন ব্যক্তি জোর করেই তরমুজ নিয়ে যান। এমন অবস্থায় চলতে থাকলে পাইকাররা আর এখানে তরমুজ কিনতে আসবে না, এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জমির মালিক লিটন মিয়া বলেন, ‘আমার জমি ব্যবহার করে টাফি থেকে তরমুজ ট্রাকে লোড করা হয়। আমি পাইকারদের কাছে কিছু দাবি করিনি। মনির ও মিলনকে নিষেধ করায় তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত।’
বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি দেখার জন্য স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছি।’