ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবে শহরজুড়ে চলা ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার ঘটনায় হওয়া মামলায় আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিভিন্ন এলাকা থেকে সোমবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের দাবি তারা সবাই হেফাজতের কর্মী-সমর্থক।
এ নিয়ে তাণ্ডবের ঘটনায় জেলায় ৩১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে জানানো হয়, হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় মোট ৫৬টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪টি, সরাইলে ২টি এবং আখাউড়া রেলওয়ে থানায় ১টি মামলা হয়েছে।
৫৫টি মামলায় ৪১৪ জনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় ৩৫ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গত শনিবার ৩০ জনকে ও রোববার রাতে পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডিআইওয়ান) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, পুলিশ ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেখে আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গত ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসা থেকে কয়েক হাজার ছাত্রের মিছিল বের হয়। তারা শহরের কেন্দ্রস্থল বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করে আগুন দেয়। পাশাপাশি তারা আগুন দেয় শহরের রেলস্টেশন, আনসার ক্যাম্প, মৎস্য অধিদপ্তরে।
হামলা হয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়েও। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে একজন নিহত হয়।
পরদিন মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশের সঙ্গে মাদ্রাসাছাত্রদের সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় পাঁচজন।
নিহত ব্যক্তিদের নিজেদের কর্মী দাবি করে প্রতিবাদে ২৮ মার্চ হরতাল ডাকে হেফাজত। হরতালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে ব্যাপক তাণ্ডব। বঙ্গবন্ধুর দুটি ম্যুরাল ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সবগুলো স্থাপনায় ভাঙচুরের পাশাপাশি ধরিয়ে দেয়া হয় আগুন।
হামলা চলে পৌরসভা কার্যালয়, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়, শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, গণগ্রন্থাগার, সংগীতজ্ঞ আলাউদ্দিন খাঁর স্মৃতিবিজড়িত ‘সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন’, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়, বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকারের অফিস, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি এবং সরাইলের খাটিহাতা হাইওয়ে থানায়।