বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সালিশের নামে ইউপি সদস্য ও পুলিশ সদস্যের ‘টাকা ভাগাভাগি’

  •    
  • ২০ এপ্রিল, ২০২১ ১৮:১৯

খেতের তরমুজ এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রির পর বেশি দামে আরেক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন কৃষক মোস্তফা। অভিযোগ, এ নিয়ে দ্বন্দ্ব মীমাংসায় গিয়ে লাভের কিছু টাকা জমির মালিক ও ব্যবসায়ীকে দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন ইউপি সদস্য মামুন।

বরগুনার আমতলীতে খেতের তরমুজ বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্ব মেটাতে গিয়ে লাভের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যসহ এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামে এই সালিশ হয়।

স্থানীয় তরমুজ চাষি মোস্তফা সরদার জানান, তিনি এ বছর এক হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি খেত থেকেই ৭৭ হাজার টাকায় তরমুজগুলো ব্যবসায়ী আফাজ উদ্দিনের কাছে বিক্রি করেন। কিন্তু আফাজ খেত থেকে তরমুজ কেটে নেননি। এদিকে বাজারে তরমুজের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চল থেকে অনেক ব্যবসায়ী তরমুজ কিনতে যান। গত শনিবার তিনি ওই তরমুজ শামিম নামের আরেক ব্যবসায়ীর কাছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।

তিনি আরও জানান, গত রোববার আফাজ তরমুজ কাটতে গিয়ে দেখেন, অন্য একজন খেত থেকে তরমুজ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় আফাজ গাজীপুর পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, বিষয়টি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় গ্রামের খলিল খানের দোকানের সামনে স্থানীয় গাজীপুর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই নাজমুল হোসেনের উপস্থিতিতে ইউপি সদস্য মামুন সিকদারসহ সোহেল রানা, ফুয়াদ, সবুজ ও খবির নামে পাঁচজন সালিস বৈঠকে বসেন। ওই সময় ব্যবসায়ী আফাজকে আসল ৭৭ হাজার টাকাসহ লাভের অর্ধেক ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জমির মালিক মোস্তফা ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ইউপি সদস্য মামুন সিকদারের হাতে তুলে দেন।

অভিযোগ উঠেছে, জমির মালিক পুরো টাকা দিলেও ইউপি সদস্য মামুন ব্যবসায়ী আফাজকে মূল টাকার সঙ্গে লাভের মাত্র ১৫ হাজার টাকা দেন। বাকি টাকার মধ্যে জমির মালিক মোস্তফাকে ৩০ হাজার, এএসআই নাজমুলকে ১০ হাজার দেন। বাকি টাকা মামুন নিয়ে যান।

ব্যবসায়ী আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘সালিশে তাকে তরমুজ না দিয়ে আসল ৭৭ হাজার এবং লাভের অর্ধেক ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা দেয়ার কথা হয়। কিন্তু ইউপি সদস্য মামুন তা না দিয়ে মূল টাকার সঙ্গে মাত্র ১৫ হাজার টাকা দেন। এখন ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।’

খেতের মালিক মোস্তফা সরদার জানান, তরমুজ বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্ব সালিস বৈঠকে মীমাংসা হয়েছে। ইউপি সদস্য মামুন তাকে ৩০ হাজার টাকা দিয়েছেন। আরও টাকা দেয়ার কথা ছিল, তবে তা দেননি।

সালিশে অংশ নেয়া সোহেল রানাও জানান, খেতের মালিক ও প্রথম ব্যবসায়ীর মধ্যে লাভের টাকা সমান ভাগে ভাগ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে মামুন সবাইকে কিছু টাকা দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে গাজীপুর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই নাজমুল হোসেন দাবি করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি সালিশে উপস্থিত ছিলেন।

ইউপি সদস্য মামুন সিকদারও টাকা ভাগাভাগির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, বিষয়টি সমাধানের জন্য সালিশ ডাকা হয়। সেখানেই বিষয়টি সমাধান করা হয়।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, একই তরমুজ এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রির পর বেশি দামে আরেকজনের কাছে বিক্রির অভিযোগে একজন তাকে ফোন করেছিলেন। তিনি স্থানীয়ভাবে এটির সমাধান করতে বলেন। না হলে লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। এরপর আর ওই ব্যক্তি তাকে কিছু জানাননি।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম হাওলাদার জানান, তরমুজ বিক্রি নিয়ে সালিশের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।

এ বিভাগের আরো খবর