নেত্রকোণার খালিয়াজুরীতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসকের দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
৭২ বছর বয়সী অমলেন্দু দেব রায়ের অভিযোগ, ওই চিকিৎসক হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে দিয়ে তার চিকিৎসা করিয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধা অমলেন্দুর বাড়ি উপজেলা সদরে।
ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তিনি এই অভিযোগ জানান, যা নিয়ে নানান ধরনের আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
তিনি লিখেছেন, রোববার সকাল ৬টার দিকে অসুস্থ বোধ করায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সে সময় সেখানে জরুরি বিভাগ বা কোথাও চিকিৎসক, নার্স বা কোনো স্টাফ ছিলেন না। প্রায় আধা ঘণ্টা পর জরুরি বিভাগ থেকে চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারী আসেন। মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিলে কর্মচারী রফিক মিয়া চিকিৎসক মাসুদুর রহমানকে ফোন করেন। আসতে দেরি দেখে অমলেন্দু নিজেও ডাক্তারকে ফোন করেন। এতে চিকিৎসক বিব্রতবোধ করেন।
তিনি লেখেন, পরে জরুরি বিভাগে এসে রোগীকে কেন ফোন নাম্বার দিলেন এ নিয়ে রফিক মিয়াকে ধমক দেন মাসুদুর। অমলেন্দুর চিকিৎসা করার জন্য ক্যাথেডার প্রয়োজন ছিল, যার সাপ্লাই নেই বলে জানানো হয়। পরে ক্যাথেডার কিনে রফিক মিয়াকে দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা অমলেন্দু দেব রায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিলে ডাক্তার সাহেব রাগান্বিত হয়ে বলেন, আপনি যেমন মুক্তিযোদ্ধা, তেমনি আমার বাবাও মুক্তিযোদ্ধা এবং দাদাও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। একজন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে ডাক্তারের এই রকম আচরণে আমি হতাশ। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।’
এ ব্যাপারে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রফিক মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মহোদয়কে আমি নিজে বাইরে থেকে ক্যাথেটার কিনে এনে দিয়েছি এবং স্যারের পরামর্শে সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি।’
এ বিষয়ে খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ফোন করার পরপরই ইমার্জেন্সিতে এসে বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করি। উনি এখন সুস্থ আছেন।’
এ বিষয়ে এর বেশি আর কথা বলতে চাননি তিনি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে খালিয়াজুরী উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উসমান গনি বলেন, ‘জরুরি বিভাগে ভোর ছয়টায় কোন ডাক্তার থাকে না। ফোন করলেই আসেন। রোজা-রমজানের দিন তাদেরও তো বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। তবুও বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে এরকম ব্যবহার খুব দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’