বাঁধ ভেঙে ডুবেছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার তিন গ্রাম। ভেসে গেছে মাছের ঘের। পুরোপুরি বিপর্যস্ত তিন গ্রামের মানুষ।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বাঁধের ঠিকাদারের অবহেলাই তাদের এই ভোগান্তির কারণ।
খোলপেটুয়া নদীর দয়াঘাট পয়েন্টের বাঁধ ভেঙে গত ৩০ মার্চ আশাশুনি সদর ইউনিয়নের জেলেখালি, দয়ারঘাটসহ তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
আশাশুনি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দয়ারঘাট গ্রামের বাসিন্দা সমীর রায় নিউজবাংলাকে জানান, আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ২০ মার্চ বাঁধ পরিদর্শন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রধান প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এটি সংস্কারে বরাদ্দ দেয়া হয় ১ কোটি ৮ লাখ টাকা।
তারা ২৮ মার্চের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের প্রায় ভেঙে যাওয়া দুটি অংশ আটকানোর নির্দেশ দিলেও ঠিকাদার আব্দুস সামাদ তা করেননি।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার জানান, ২৩ তারিখে কার্যাদেশ পান আব্দুস সামাদ।
তবে আব্দুস সামাদের দাবি, ৪ থেকে ৫ দিনে ক্লোজার বন্ধ করা সম্ভব নয়। জিও ব্যাগসহ অন্যান্য প্রস্তুতির দরকার হয়। এ কাজে অন্তত ১০ থেকে ১৫ দিন প্রয়োজন। কিন্তু সে সময় তারা পাননি।
জেলেখালি গ্রামের অরবিন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘আমার ১৩ বিঘার একটা ঘের রয়েছে। দয়াঘাট ভেঙে পানি ঢুকে আমার লক্ষাধিক টাকার মাছ ভেসে গেছে।’
একই এলাকার মিনতি বিশ্বাস জানান, তার খামারে ১৯০টি হাঁস আছে। হাঁসের ডিম বিক্রি করে প্রতিদিন প্রায় হাজারখানেক টাকা আয় হতো। কিন্তু এখন লোনা পানি ঢুকে যাওয়ায় হাঁসের মড়ক দেখা দিয়েছে।
আশাশুনি গ্রামের প্রতাপ রায় জানান, আশাশুনি সদর থেকে জেলেখালি পর্যন্ত চার কিলোমিটার পর্যন্ত যে পাকা রাস্তা সেটিই একমাত্র যোগাযোগের পথ। কিন্তু রাস্তাটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কোনো যানবাহন যে পথে চলছে না। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরো এলাকার মানুষ।
আশাশুনি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মিলন জানান, বাঁধ ভেঙে কয়েক হাজার বিঘা মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে। প্রায় সাড়ে তিনশ পরিবার জলাবদ্ধ। দুইশ ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে।
এদিকে ঠিকাদার আব্দুস সামাদ জানান, খোলপেটুয়া নদীর আশাশুনির দয়ারঘাট পয়েন্টে ৫৩৫ মিটার বাঁধ নির্মাণকাজ চলছে। ইতিমধ্যে জায়গা দুটো মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে।
বর্ষা মৌসুমের আগেই সংস্কারকাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।