বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকা ছাড়ছেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমি‌করা

  •    
  • ১৭ এপ্রিল, ২০২১ ২১:৩২

এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে স্থায়ী অস্থায়ী মিলে অন্তত পাঁচ হাজার শ্রমিক কর্মরত। তাদের মধ্যে অনেকে স্থানীয় শ্রমিক, যারা বাঁশখালীসহ আশপাশের উপজেলার বাসিন্দা। তবে কর্মরত বেশির ভাগ শ্রমিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে থাকে। পরিবার নিয়ে কিছু শ্রমিক আশপাশে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন।

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় একটি নির্মাণাধীন কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষের পর এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কর্মরত শ্রমিকরা। শনিবার বিকেল থেকে ঘরের আসবাবপত্র মাথায় নিয়ে এলাকা ছাড়তে দেখা গেছে অনেক শ্রমিককে।

এর আগে শনিবার সকালে শিল্প গ্রুপ এস আলমের মালিকানায় এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে চীনা প্রতিষ্ঠান সেফকো থ্রি পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড অর্থায়ন করেছে।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে স্থায়ী অস্থায়ী মিলে অন্তত পাঁচ হাজার শ্রমিক কর্মরত। তাদের মধ্যে অনেকে স্থানীয় শ্রমিক, যারা বাঁশখালীসহ আশপাশের উপজেলার বাসিন্দা। তবে কর্মরত বেশির ভাগ শ্রমিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে থাকে। পরিবার নিয়ে কিছু শ্রমিক আশপাশে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন।

বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন নোয়াখালীর বাসিন্দা মোহাম্মদ রুবেল। বিকেল ৫টার দিকে তিনি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন। তখন তার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি খারাপ। এখানে থাকলে কখন কী হয় জানা নেই। তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি।’

কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রটির শ্রমিক সিলেট জেলার বাসিন্দা আকমল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পাশে দুই রুমের একটি ঘরে ভাড়ায় থাকতাম। সংঘর্ষের সময় আমি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ছিলাম না। তখন আমার ডিউটি ছিল না। তবুও পরিস্থিতি খারাপ দেখে বাড়ি চলে যাচ্ছি।’

বাঁশখালী গণ্ডামারা ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রটির শ্রমিক মো. সাজ্জাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে অনেকে কাজ করত যাদের বাড়ি হাতিয়া, সিলেটসহ নানা এলাকায়। ঘটনার পর তারা এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন।’

স্থানীয় সংবাদকর্মী মোহাম্মদ রিয়াদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংঘ‌র্ষের ঘটনার পর এলাকা ছে‌ড়ে যাচ্ছেন শ্রমি‌কেরা। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

বাঁশখালী গণ্ডামারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা গণ্ডামারা ইউনিয়নে অবস্থান করছি। অনেক শ্রমিককে বাড়ি চলে যেতে দেখছি।’

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে শনিবার এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১১ জন।

গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে শনিবার বেলা ১১টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আজিজুল ইসলাম।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শফিউর রহমান মজুমদার জানান, সংঘর্ষে আহত কয়েকজনকে সকালে হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে গুলিবিদ্ধ চারজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে একজন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১৬ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি এস আলম গ্রুপের এসএস পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে ও চীনা প্রতিষ্ঠান সেফকো ও এইচটিজির মধ্যে চুক্তি হয়। ২০১৭ সাল থেকে গণ্ডমারা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমিতে আড়াই শ কোটি ডলার ব্যয়ে এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়।

চুক্তি হওয়ার পর থেকেই গ্রামবাসীদের একটি পক্ষ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছে। তাদের বক্তব্য, এতে গ্রামের পরিবেশ দূষিত হবে। আরেক পক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পক্ষ নেয়।

এর জেরে ২০১৬ সালের এপ্রিলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। তা নিয়ন্ত্রণে যায় পুলিশ। তখন নিহত হন চার গ্রামবাসী। আহত হয় পুলিশসহ অন্তত ১৯ জন।

এ ঘটনার পাঁচ বছর পর আবারও রণক্ষেত্র হলো বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা।

এ বিভাগের আরো খবর