কুমিল্লায় এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ছেলের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তার বাবা-মা।
অভিযোগ উঠেছে পাশের বাড়ির কলেজ শিক্ষক আক্তার হোসেন সরকার সেলিম এই দম্পতিকে মারধর থেকে বাঁচাতে গেলে তাকেও মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
জেলার দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের এলাহাবাদ গ্রামের ইউপি সদস্য ওমর ফারুক সরকারের এই অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেছেন এই জনপ্রতিনিধির বৃদ্ধ বাবা ফরিদ উদ্দিন সরকার।
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে মেম্বার হওয়ার পর থেকে নানা কাজকর্মে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। গত ৩১ মার্চ ফারুক আমাকে বেধড়ক মারধর করে আলমারি ভেঙে টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, দলিলপত্র মালামাল নিয়ে যায়।
‘এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গত ১ এপ্রিল আদালতে মামলা করি। মামলার বিষয়টি জানার পর গত ১২ এপ্রিল দুপুরে ফারুক ও তার স্ত্রী ছেনি ও লাঠি নিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে।’
ঘটনাটি দেখতে পেয়ে কলেজ শিক্ষক আক্তার হোসেন সরকার সেলিম ও আমার আরেক ছেলে এসে প্রাণে বাঁচান বলেও জানান এই বৃদ্ধা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, ‘পরে জেনেছি- ওমর ফারুক গত ১৪ এপ্রিল নিরপরাধ শিক্ষক আক্তার হোসেনকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা করেছে। কিন্তু আমাকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আমি থানায় গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।’
ছেলের হুমকি ও তার করা মামলায় হয়রানির ভয়ে এবং পুলিশের অসহযোগিতায় প্রাণভয়ে বাড়িঘরে যেতে পারছেন না বলেও জানান ফরিদ উদ্দিন।
মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইল সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আক্তার হোসেন সরকার সেলিমও এই ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে বুধবার কুমিল্লা পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
তিনি জানান, ওমর ফারুক সরকার এক বছরে তার নামে সাতটি মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য ওমর ফারুক সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাবা ফরিদ উদ্দিন দুই বিয়ে করেছেন। আমিসহ দুই ভাই তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান। আমাদের দুই ভাইকে অর্থ-সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে তিনি আমার সৎ মা ও সন্তানদের নিয়ে আছেন। সম্পদের অধিকার চাওয়ায় আমার উপর হামলা হয়েছে, তাই মামলা করেছি। বাবাকে মারধরসহ অন্যান্য অভিযোগ সঠিক নয়।’
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, ‘জায়গা-সম্পত্তির বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। ফারুককে মারধরের ডাক্তারি সনদ আছে, তাই মামলা নিয়েছি। তার বাবা ফরিদ উদ্দিন একটি অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। তাকে বলেছি, ডাক্তারি সনদ নিয়ে আসলে মামলা নেয়া হবে।’