ঢাকার সাভারের বিরুলিয়ায় নিজ বাড়িতে একাই বসবাস করতেন ৬১ বছরের বৃদ্ধা ফাতেমা বেগম। ব্যাংক কর্মকর্তা ছেলে চাকরির সুবাদে পরিবার নিয়ে থাকেন রাজধানীর মিরপুরে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন প্রতি শুক্রবারে মাকে এসে দেখে যান তিনি।
গত শুক্রবারে বাসায় এসে মাকে দেখতে না পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। এক পর্যায়ে বাথরুমের পাশে তার গলিত মরদেহ দেখতে পান।
মামলা হয়। কিন্তু তদন্তে নেমে ঘুরপাক খেতে থাকে পুলিশ। তবে সাত দিন পর রহস্য উদঘাটনের কথা জানিয়েছে র্যাব। শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে দুইজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টিও জানায় তারা।
আসামিরা হলেন নওগাঁ জেলার রবিউল মির্জা ও গাইবান্ধা জেলার কামরুল ইসলাম। তারা পেশায় রাজমিস্ত্রী। ঘটনার সময় ওই বৃদ্ধার বাড়ির পাশেই একটি বাসায় কাজ করছিলেন তারা।
র্যাব জানায়, গত ৭ এপ্রিল ফাতেমা বেগমকে বিরুলিয়ার বাসায় হত্যা করে পালিয়ে যান ওই দুইজন। দুই দিন পর নিহতের ছেলে ও অজ্ঞাত পরিচয়দের আসামি করে মামলা করেন। পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি রহস্য উদঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব।
পরে সেই বৃদ্ধার চুরি যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার দুপুর ও রাতে অভিযান চালিয়ে বিরুলিয়া এলাকা থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় মোবাইল ফোনটি।
র্যাব জানায়, তাদেরকে দুই আসামি জানিয়েছেন, ঘটনার দিন তারা বৃদ্ধাকে গোসলখানায় যেতে দেখে বাসায় ঢুকে চুরি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু দেখে ফেলেন সেই নারী। তখন তাকে লাথি দিলে অজ্ঞান হয়ে যান। পরে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যাওয়ার ভয়ে আসামিরা তাকে হত্যা করে।
র্যাব জানায়, রবিউল একটি কোদাল নিয়ে এসে বৃদ্ধার হাত, মুখ, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
কেউ যেন সন্দেহ না করতে পারে সে জন্য সে পাশের বাসায় গিয়ে আগের মতোই কাজ করতে থাকে।
কামরুল এই হত্যার পর নিজ জেলা গাইবান্ধায় আত্মগোপন করেন। পরে আবার ঢাকায় ফেরেন।
রবিউল ওই বৃদ্ধার বাসা নির্মাণের সময় রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেছিলেন।
র্যাব-৪ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সাজেদুল ইসলাম সজল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হত্যার পর আসামিরা ভিকটিমের মোবাইল ও কিছু টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। তারা চুরি করা মোবাইলের সিম পাল্টে ফেলেন। তবে মোবাইলের সূত্র ধরেই প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।’
দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুরেই তাদেরকে সাভার মডেল থানায় হস্তান্তর করে র্যাব।