লালমনিরহাটে এক বোতল ফেনসিডিল পাওয়ার কথা জানিয়ে এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের পর তার ছবি তুলে সমালোচনার মুখে পড়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি।
পরিবারের পক্ষ থেকে এই বিষয়টিকে চক্রান্ত অভিযোগ করে বলা হয়েছে, তাকে যেখান থেকে আটক করা হয়েছে, সেখানে তার সঙ্গে আরও একজন ছিলেন। তাকে না ধরে এভাবে ছবি তুলে তার অসম্মান করা হয়েছে।
এভাবে ছবি তুলে গণমাধ্যমকে দেয়ার বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধও আছে।
ওই সাংবাদিক একটি জাতীয় দৈনিক ও একটি সংবাদ সংস্থার স্থানীয় প্রতিনিধি। পাশাপাশি তিনি একটি কলেজে শিক্ষকতা করেন।
বিজিবি জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের রত্নাই বেইলি ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর একটি টেবিলে সেই ফেনসিডিলের বোতল রেখে রশি দিয়ে বেঁধে তার ছবি তোলা হয়। তাকে মারধর করার অভিযোগও করেছে পরিবার।
লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কুলাঘাট ক্যাম্পের ইনচার্জ হাবিলদার আনোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা রত্নাই বেইলি ব্রিজে টহল দিচ্ছিলাম। এ সময় তিনি (সেই সাংবাদিক) মোটরসাইকেলে লালমনিরহাট শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। আমরা তাকে থামিয়ে সার্চ করে এক বোতল ফেনসিডিল পাই। এরপর তাকে লালমনিরহাট সদর থানায় হস্তান্তর করে বিজিবির পক্ষ থেকে মাদক মামলা করা হয়। মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।’
এরপর শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে শাহীনকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা জুয়েল রানা জানান, ‘তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে পুলিশ তাকে আদালতে নিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে বিজিবির আনোয়ার হোসেন জানান, ‘আটকের সময় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে শাহীনকে মারধর করা হয়।’
লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এসএম তৌহিদুল ইসলাম জানান, ‘মাদকের ক্ষেত্রে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি। কাউকে তার পরিচয় দিয়ে বিবেচনা করি না। এর আগেও তাকে কুড়িগ্রামের মোগলহাট বিজিবি আটক করেছিল। প্রেসক্লাবের সভাপতি তাকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনেন।’
শুক্রবার সকালে ওই সাংবাদিকের স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী সাংবাদিকতার কাজে গিয়েছিলেন বলে জানি। তার সঙ্গে যিনি ছিলেন তাকে আটক করা হয়নি। অথচ আমার স্বামীকে আটক করা হলো কেন? তাকে কেন মারধর করা হয়েছে?
‘তিনি একজন সিনিয়র সাংবাদিক ও কলেজশিক্ষক। অথচ তাকে এক বোতল ফেনসিডিল দিয়ে আটক করে কোমড়ে দড়ি বেঁধে এবং হাতকড়া পরিয়ে থানায় আনা হয়েছে। তার সঙ্গে জঘন্য অপরাধীদের মতোই আচরণ করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার চাই।’