শরীয়তপুর সদর উপজেলায় এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে শুক্রবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
নিহত দাদন খলিফা শৌলপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগ কমিটির সদস্য ছিলেন। শৌলপাড়া ইউনিয়নের গয়ঘর গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার ওপর হামলা হয়।
দাদন ছয় বছর মালয়েশিয়ায় থাকার পর গত জানুয়ারিতে দেশে ফেরেন। এ মাসের শুরুতে তার বিয়ের রেজিস্ট্রি করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা করা হয়নি।
পালং মডেল থানা জানায়, গয়ঘর গ্রামের খলিফা ও খান পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। ১৯৯৭ সালে ডাকাতি করতে গিয়ে ইদ্রিস খান, আতাহার খান, শাজাহান খান ও আজাহার খান দাদন খলিফার ফুপু বেলানুর আক্তারকে হত্যা করে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হলেও রাজনৈতিক কারণে মামলাটি চাপা পড়ে যায়।
সেই থেকে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। সম্প্রতি খালে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে দাদন খলিফা তারাবির নামাজ পড়ে বাড়ির পাশের মসজিদ থেকে বের হলে ইদ্রিস খানের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন তাকে ফসলের মাঠে ধরে নিয়ে গিয়ে রামদা ও ট্যাঁটাসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপায়।
পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকায় নেয়ার পথে শুক্রবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে দাদন খলিফার বাবা সেকান্দার খলিফা ১০ জনের বিরুদ্ধে পালং থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। দাদনের মৃত্যুর পর একে হত্যা মামলা হিসেবে নেয়া হয়েছে।
সেকান্দার খলিফা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২৪ বছর আগে অরা আমার বোইনরে মাইরা হালাইছে। ২৪ বছরেও হেই বিচার পাই নাই। বিচার না অয়নেই আইজ আমার পোলাডারে আরাইলাম। নামাজ পইড়া বাইরাছি আর আমাগো সামনে থেইক্যা ইদ্রিস খা বোমা ফাটাইয়া পোলাডারে মুখে গামছা বাইদ্যা তুইল্যা লইয়া গেল। পাট খেতের মধ্যে নিয়া কোপাইয়্যা মাইরা হালাইলো। কী দোষ করছিলাম আমরা?
‘১৫ দিন আগে পোলাডার কাবিন করছি। করোনার কারণে এহনও বউডারে উডাইয়া আনতে পারি নাই। স্বামীর ঘরে আহনের আগেই মাইয়াডা বিধবা অইল। ওই পাষণ্ডগো বিচার চাই।’
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন জানান, হাসপাতালে আহত অবস্থায় দাদন খলিফা পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। তার ও বাদীর বিবরণ অনুযায়ী মামলা হয়েছে।
এ ঘটনার পর থেকে ইদ্রিস খান ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।