জেল থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে শপথ নেওয়ার দুইদিন পর যশোর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সাইদুর রহমান ওরফে ডিম রিপনকে দুইদিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়েছে আদালত।বৃহস্পতিবার দুপুরে এ আদেশ দেন যশোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মারুফ আহমেদ।
সাইদুর রহমান রিপন শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়া এলাকার বদর উদ্দিনের ছেলে।১৩ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ছয় ঘণ্টার প্যারোলে মুক্ত হয়ে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে শপথ নেন নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সাইদুর রহমান। এদিন দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তাকে প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়।
তিনি ইজিবাইকের চালক আলাউদ্দিন হত্যা মামলায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন। বন্দী অবস্থায় গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পাঁচ হাজার ১১৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সাইদুর রহমানকে প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়। তিনি খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কাউন্সিলর পদে শপথ নেন। নির্ধারিত সময়ে তাকে কারাগারে আনা হয়।যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, সাইদুর রহমান ওরফে ডিম রিপন পৌরসভার নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। শপথ গ্রহণের জন্য তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। মন্ত্রণালয় তার ছয় ঘণ্টা প্যারোলে মুক্তির অনুমোদন করে। মঙ্গলবার তিনি শপথ নেন।২০২০ সালের ১৭ জুলাই রিপনের নেতৃত্বে আরবপুরের আলাউদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ মামলায় গত ২৪ মার্চ রাতে শহরের মণিহার এলাকা থেকে রিপনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। মামলা সূত্রে জানা যায়, যশোর শহরের আরবপুর এলাকার কলুপাড়া বাবুর বাড়ির ভাড়টিয়া শুকুর আলীর ছেলে আলাউদ্দিন ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ২০২০ সালের ১৭ জুলাই সকালে মোবাইল ফোনে আলাউদ্দিনকে বারান্দী মালোপাড়ায় ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে রিপনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আলাউদ্দিনকে কুপিয়ে জখম করে।
স্থানীয়রা আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের বাবা শুকুর আলী রিপনসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।এর আগে ২০১৩ সালে যশোরের এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা মামলায় ১ নম্বর আসামি রিপন। হত্যাকাণ্ডের ২৯ দিন আগে আরও একবার হামলার শিকার হয়েছিলেন নজরুল ইসলাম।
পরদিন নজরুল ইসলাম নিজেই রিপনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা করার এক মাসের মধ্যে খুন হন তিনি। নজরুল ইসলাম হত্যা মামলাসহ অন্তত দেড় ডজন মামলার আসামি সাইদুর রহমান রিপন।