বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হবিগঞ্জে এক বছরেও স্থাপন হয়নি পিসিআর ল্যাব

  •    
  • ১৫ এপ্রিল, ২০২১ ২২:২৮

করোনাভাইরাস মহামারির প্রথম ধাপে করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব স্থাপনের ঘোষণা দিলেও স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি এটি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। তবে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানেন না স্বয়ং সিভিল সার্জনও।

হবিগঞ্জে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি এপ্রিল মাসে ২৫ থেকে ২৯ শতাংশে ওঠানামা করছে সংক্রমণের হার।

সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় চাপ বেড়েছে করোনা পরীক্ষায়ও। অথচ জেলায় এখনও স্থাপিত হয়নি করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব।

বাধ্য হয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠাতে হয় ঢাকা অথবা সিলেট। সেখান থেকে নমুনা পরীক্ষার ফল আসতে একদিকে যেমন সময় বেশি লাগে অন্যদিকে নষ্ট হয়ে যায় অনেক নমুনা।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে জানা যায়, হবিগঞ্জে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ১১ এপ্রিল। সেই সময় থেকে এ পর্যন্ত জেলায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৫৩৫টি।

এর মধ্যে পজিটিভ এসেছে ২ হাজার ২০১টি এবং নেগেটিভ এসেছে ১২ হাজার ৪১৮টি। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭২১ জন। এখনও ফল পাওয়া যায়নি ৯১৬টির। এর মধ্যে সম্প্রতি সময় পাঠানো হয়েছে ৫৩৬টি। অর্থাৎ পুরোনো ৩৮০টি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা হিসেবেই ধরা হয়েছে।

জেলায় বর্তমানে করোনার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৮০ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১০ জন এবং বাকিরা নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৮ জন।

বেহাল চিকিৎসাব্যবস্থা

হবিগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাব্যবস্থা একেবারে নেই বললেই চলে। যে কারণে গুরুতর অসুস্থ হলে ঢাকা অথবা সিলেটে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। বাকিদের হোম আইসোলেশনই একমাত্র ব্যবস্থা।

চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পর্কে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে জানা যায়, করোনা চিকিৎসার জন্য জেলায় আলাদা কোনো হাসপাতাল নেই।

করোনা সংক্রমণের প্রথমদিকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যার সদর আধুনিক হাসপাতালের নতুন ভবনের পঞ্চম তলায় ১০০ শয্যার দুটি করোনা ইউনিট খোলা হয়। এর মধ্যে বর্তমানে একটি ইউনিট (৫০ শয্যা) বন্ধ রয়েছে। জেলায় নেই কোনো আইসিইউ বেড ও ভেন্টিলেটর। নিজস্ব অক্সিজেন ব্যবস্থা না থাকায় আশঙ্কাজনক করোনা রোগীদের জন্য সদর আধুনিক হাসপাতালের ৮টি অক্সিজেন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

যদিও এখন পর্যন্ত সেগুলো কোনো করোনা রোগীর জন্য ব্যবহার করা হয়নি। একটি সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন থাকলেও এখন পর্যন্ত চালু হয়নি সেটি। গুরুতর অসুস্থ সাধারণ রোগীর জন্য র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে ১৫ মিনিটে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে যেখানে এ পর্যন্ত মাত্র ১২০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জনের পজিটিভ আসে।

করোনাভাইরাস মহামারির প্রথম ধাপে করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব স্থাপনের ঘোষণা দিলেও স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি এটি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। তবে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানেন না স্বয়ং সিভিল সার্জনও।

গত বছরের ২০ মে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বেলাল হোসেন পাঁচজন ল্যাব টেকনেশিয়ান নিয়োগের চিঠি পাঠান। তাদের দুইজন হবিগঞ্জের। বাকি তিনজন ঢাকা, সিলেট ও মৌলভীবাজারের। জনবল নিয়োগ দেয়ার এক বছর হতে চললেও এখন পর্যন্ত পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়নি।

এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সভাপতি ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন বলেন, ‘হবিগঞ্জে দিন দিন করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। অথচ করোনার চিকিৎসার কোনো যন্ত্রপাতি নেই হবিগঞ্জে। একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য এক বছর আগে জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই পিসিআর ল্যাবও স্থাপন হলো না। আমি মনে করি চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নতি না করতে পারলে আমরা সহসা করোনা থেকে মুক্তি পাব না।’

এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডা. কেএম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘করোনার চিকিৎসার জন্য সব ধরনের যন্ত্রপাতি আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন ছিল। কিন্তু মধ্যে করোনার প্রভাব কমে যাওয়ায় সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে করোনার প্রভাব থাকুক বা কমে যাক। চিকিৎসার সব যন্ত্রাংশই হবিগঞ্জে আসবে।

‘এ ছাড়া পিসিআর ল্যাব স্থাপনের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি দল পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জায়গাও পরিদর্শন করে গেছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর