নড়াইল সদর হাসপাতালের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় হিসাবরক্ষক জাহান আরা খানম লাকির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুর শাকুর সদর থানায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলা করেন।
আব্দুর শাকুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৪৮ লাখ ১৭ হাজার ৯১২ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় হিসাবরক্ষক জাহান আরা খানম লাকির বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর-৬৫৩। এ ঘটনায় মাগুরা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক স্বপন কুমারকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৯ এপ্রিলের মধ্যে এ কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার ওসি মো. ইলিয়াছ হোসেন জানান, ‘সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক টাকা আত্মসাতের ঘটনায় একটি অভিযোগ করেছেন। আমরা অভিযোগটিকে জিডি হিসেবে গ্রহণ করে দুদকে পাঠিয়েছি।’
এদিকে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় নতুন করে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জাহান আরা খানম লাকির বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই থেকে ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত হাসপাতালের ইউজার ফি’এর (রোগি ভর্তি ফি, ওটি চার্জ, চিকিৎসা ফি, প্যাথলজি, অ্যাম্বুলেন্স, কেবিন ফিসহ বিভিন্ন খাতের) ২১ মাসের ৭০ লাখ টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা না দেয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের ৫ চিকিৎসককে সদস্য করে ৭ এপ্রিল একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত কমিটি ৪৮ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে।
নড়াইল সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. আবু সেলিম জানান, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে যে ৪৩টি চালান প্রদর্শন করেন তার মধ্যে ৯টি চালান সঠিক এবং বাকি চালানের সিল ও স্বাক্ষর জাল। এসব চালানে ১৩ লাখ ১২ হাজার ৫২০ টাকা ব্যাংকে জমা পড়েছে। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে গত সোমবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।’
এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ডা. আ.ফ.ম মশিউর রহমান বাবু বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে ৩৪টি জাল চালান এবং ৪৮ লাখ ১৭ হাজার ৯১২ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং এ ঘটনায় হাসপাতালের হিসাবরক্ষক জাহান আরা লাকিকে দায়ী করা হয়েছে।’
সদর হাসপাতালে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার ইউজার ফি আত্মসাতের ঘটনায় আগের হিসাবরক্ষক মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলা দুদকে বিচারাধীন রয়েছে।