সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ফুলতলা গ্রামে হিন্দুপল্লিতে হামলা ও মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
হামলায় জড়িতদের বিচার এবং হিন্দু পরিবারের নিরাপত্তার দাবিতে বুধবার বেলা ১১টার দিকে শ্যামনগর-মুন্সিগঞ্জ সড়কের পাশে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে ৬০-৭০ জন হামলা চালায়। এই হামলায় ফুলতলার বাসিন্দাদের পাশাপাশি উত্তর কদমতলা ও বংশীপুর এলাকার লোকজন অংশ নেয়। তারা মোটরসাইকেল এবং পিকআপ নিয়ে জড়ো হয়।
তাদের অভিযোগ, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউপি সদস্য আকবর পাড় এবং শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের নেতা পল্লব মণ্ডলের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। হামলায় চার থেকে পাঁচটি বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ ছাড়া পাশের রাশ মন্দিরের কয়েকটি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়।
হামলাকারীদের ছোড়া কাঁচের বোতল ও ইটের আঘাতে এ সময় দুই নারীসহ ১০-১২ জন আহত হন। তাদের মধ্যে আটজনকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
রাতেই কালীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে ইউসুফ নামে একজনকে বংশীপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, উত্তর কদমতলা গ্রামের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র পল্লব মণ্ডলের সঙ্গে ফুলতলার অষ্টম শ্রেণির এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া নিয়ে স্থানীয় তরুণরা পল্লবকে সতর্ক করে।
এ নিয়ে সোমবার দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার রাতে ভাড়াটে লোকজন নিয়ে আকবর পাড় ও পল্লবের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়।
কিশোরীর চাচা জানান, রাত আটটার দিকে বহিরাগতরা ইটপাটকেল ছুড়তে ছুড়তে বাড়ির ভেতর ঢুকে তার ভাতিজিকে উঠিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। ওই সময় বাধা দিতে গেলে তার ভাইসহ পরিবারের একাধিক সদস্য আহত হয়। ভাঙচুর করা হয় তাদের পরিবারের চার-পাঁচটি ঘর।
এ বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য আকবর পাড়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। পল্লভ মণ্ডলের ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
স্থানীয় সমাজকর্মী মোহন কুমার মণ্ডল জানান, কালীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলেও এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, হামলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই মধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের আটকে কাজ করছে পুলিশ।