ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে ডিলারের দোকানঘর সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের শৈলমারী বাজারের শরিফুল ইসলাম পলাশ নামের ওই ডিলারের দোকানঘরটি সিলগালা করে দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
আলফাডাঙ্গা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ১২ জন ডিলারের মাধ্যমে ৫ হাজার ৩৬৮ জন হতদরিদ্র উপকারভোগী কার্ডধারীকে প্রতিমাসে ১৬১ দশমিক ০৪ মেট্রিক টন চাল দেয়া হয়। বছরে ৫ মাস ১০ টাকা কেজি দরে এ চাল বিতরণ করা হয়।
গত সোমবার চাল বিতরণ শুরু হয় উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ (সাবেক ২ নম্বর ওয়ার্ড) ওয়ার্ডের শৈলমারি বাজারে ডিলার শরিফুল ইসলামের দোকানঘরে। তার আওতায় ৩৭৩ জন হতদরিদ্র কার্ডধারী রয়েছেন। এর মধ্যে মঙ্গলবার ২৩৬ জনকে চাল দেয়া হয়।
বুধবার আবার চাল দেয়া শুরু হলে ডিলারের বিরুদ্ধে প্রত্যেক কার্ডধারীর প্রাপ্য ৩০ কেজি চালের মধ্যে ১ থেকে দেড় কেজি করে কম দেয়ার অভিযোগ ওঠে। দুপুরে উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিকুর রহমান মোল্লা এ অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে গিয়ে চাল বিতরণ বন্ধ করেন এবং ডিলারের দোকানঘরটি সিলগালা করে দেন।
বুড়াইচ ইউনিয়নের শিয়ালদী গ্রামের কার্ডধারী ভ্যানচালক আবু সাঈদ বলেন, ‘আমরা চারজন কার্ডধারী একসাথে চাল উঠাতে যাই। দুইজনকে একসাথে ৬০ কেজি চাল দেয় ডিলার। পরে অন্য একটি ঘরে ওজন দিলে দেখা যায় তিন কেজি কম। আমাদের দেয়া হয়েছে ৫৭ কেজি চাল।’
তবে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে ডিলার শরিফুল ইসলাম পলাশ বলেন, ‘আমি সরকারি ট্যাগ অফিসারকে সাথে রেখে কার্ডধারীদের মধ্যে সঠিকভাবে চাল বিতরণ করছি। কোনো অনিয়ম করিনি।’
শৈলমারি বাজার ডিলারের ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা দারিদ্র্যবিমোচন কর্মকর্তা স্বপন কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা সঠিকভাবে হতদরিদ্রদের চাল বিতরণ করছি। হঠাৎ বুধবার দুপুরে উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আশিকুর রহমান এসে বলেন, মঙ্গলবার দুই-তিনজনকে চাল ওজনে কম দেয়া হয়েছে। আর বুধবার দুজন কার্ডধারী ৬০ কেজি চাল নেয়ার পরে অন্য দোকানে ওজন দিয়ে দেখেছেন, তাদের চাল ওজনে তিন কেজি কম হয়েছে।’
উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, ‘শৈলমারি বাজারের ডিলার শরিফুল ইসলামের আওতায় ৩৭৩ জন কার্ডধারী রয়েছেন। ২৩৬ জনের মধ্যে মঙ্গলবার চাল বিতরণেও তিনি অনিয়ম করেছেন মর্মে অভিযোগ পেয়ে ডিলারকে সতর্ক করা হয়। তারপরও বুধবার চাল বিতরণের সময় ওজন কম দেয়ার খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়ে ডিলারের দোকানঘরটি সিলগালা করা হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপজেলা সভাপতি তৌহিদ এলাহী বলেন, ‘চাল ওজনে কম দেয়ার খবর শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। হতদরিদ্রদের চাল বিতরণে কোনো অনিয়ম হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’