বরিশাল শের-ই- বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভির ক্যামেরাপারসনকে লাঞ্ছিত এবং তার ক্যামেরা ও বুম আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
খবর শুনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে এটিএন বাংলার ক্যামেরাপারসন আলাউদ্দিন এবং মোহনা টিভির ক্যামেরাপারসন মো. সুজনকে ধাওয়া করা হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালের করোনা ইউনিটের তৃতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।
লাঞ্ছনার শিকার যমুনা টিভির ক্যামেরাপারসন আনিসুর রহমান বলেন, করোনা ইউনিটে রোগীদের নানা ভোগান্তিসহ চিকিৎসক ও নার্সদের যে সমস্যা হচ্ছে সেই সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন তৈরির জন্য যমুনা টিভির বরিশাল ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেনের সঙ্গে দুপুরে হাসপাতোলে যাই।
নিচ তলা ও দ্বিতীয় তলার ভিডিও করা শেষে তৃতীয় তলায় কাজ করার সময় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক এ এইচ এম আতাউল্লাহ ভিডিও করতে নিষেধ করেন। তখন আমরা ক্যামেরা অফ করে দেই।
এরপর ডা. আতাউল্লাহ বিষয়টি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান শাহীনকে জানালে তিনি ক্যামেরা আটকে রাখতে বলেন। এরপর তারা আমাকে লাঞ্ছিত করেন এবং একপর্যায়ে বুম ও ক্যামেরা রেখে দেন ডা. আতাউল্লাহ।
যমুনা টিভির বরিশাল ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন বলেন, করোনা ইউনিটে আমরা শুধু রোগীদের নয়, চিকিৎসক ও নার্সদের যে ভোগান্তি হচ্ছে তা নিয়ে প্রতিবেদন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই ওই চিকিৎসক ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন। পরে ক্যামেরা ও বুম ফেরত দেয়া হয়। তবে ক্যামেরার সঙ্গে থাকা মেমোরি কার্ডটি খোয়া গেছে। হাসপাতালের পরিচালক অবশ্য ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে এটিএন বাংলার ক্যামেরাপারসন আলাউদ্দিন ও মোহনা টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন সুজন বলেন, আনিসুর রহমানকে লাঞ্ছিত করার খবর শুনে তারা ঘটনাস্থলে গেলে ওই চিকিৎসক করোনা ইউনিটের নিচে এসে তাদের ধাওয়া করেন।
হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগীদের ভোগান্তির চিত্র সংবলিত রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ায় স্থানীয় সাংসদ ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম কড়া ভাষায় সতর্ক করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এতে গণমাধ্যমের উপর ক্ষুব্ধ ছিল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান শাহীন। আর সেই ক্ষোভ থেকেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা সূত্রটির।
এই বিষয়ে ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, বিষয়টি ভুলবশত হয়েছে। আমি সবার পক্ষ হয়ে ক্ষমা চেয়েছি। নানা চিন্তায় মাথা ঠিক ছিল না।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঘটনাটি ঘটেছে।