নাটোরে সুদ ব্যবসার আড়ালে চাঁদাবাজি ও জমি দখলের হোতা খুশি বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে শহরের হাজরা নাটোর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, গত ১১ এপ্রিল অনলাইন সংবাদ পোর্টাল নিউজবাংলায় শহরের হাজরা নাটোর এলাকার ‘নাটোরে দরিদ্রদের উপর সুদের বোঝা’ নিয়ে প্রকাশিত সংবাদটি পুলিশের নজরে আসে।
তখন থেকেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়। কয়েকদিনের অনুসন্ধানে সুদ ব্যবসার নামে চাঁদাবাজি ও জমি দখলের সত্যতা পাওয়ায় খুশি বেগমকে থানায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
পরে পুলিশ খুশি বেগম ও ভুক্তভোগীদের থানায় নিয়ে আসেন। সেখানে ভুক্তভোগী সামসুন্নাহার বাদি হয়ে খুশি বেগমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী কল্পনা পাহানের বসতভিটা দখল করে নেয়া ও সুদের টাকার জন্য রহিমা বেগমকে নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।
ভুক্তভোগী সামসুন্নাহারের করা মামলায় খুশি বেগমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ বিকেল পাঁচটায় তাকে সদর আমলি আদালতে হাজির করে।
আদালতের বিচারক মো. আবু সাঈদ তাঁর জামিনের আবেদন নাকচ করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ সময় পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মতিন জানান, আসামি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বহু মানুষের কাছে কথিত সুদ আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করে আসছেন। এ ব্যাপারে দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।
উল্লেখ্য, নাটোর শহরসংলগ্ন হাজরা নাটোর গ্রামের কল্পনা পাহানের একমাত্র সম্বল ছিল তাঁর বসতভিটার জমি। নিজের নামে এর দলিল থাকলেও মালিকানা ধরে রাখতে পারেননি তিনি।
খুশি বেগমের কাছ থেকে সুদে টাকা ধার নেয়ার সময় সাদা কাগজে স্বাক্ষর করেছিলেন। এখন খুশি বেগম কল্পনার জমি দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন। পরিবার নিয়ে কল্পনা থাকেন অন্যের বাড়িতে।
কল্পনা পাহানের মতো গ্রামের সামসুন্নাহার, রহিমা বেগমসহ বহু মানুষ খুশি বেগমের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে ঋণ নিয়ে সব অর্থ পরিশোধ করার পরও হয়রানির শিকার হয়েছেন। খুশি বেগমের গ্রেপ্তারের খবরে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।