বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গোলগাছ কেটে বসতি, হুমকিতে বাঁধ

  •    
  • ১৩ এপ্রিল, ২০২১ ১১:০৭

বরগুনার বাবুগঞ্জ বাজারসংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে সৃজিত গোলগাছের বাগানের মধ্যে অর্ধশতাধিক বসতঘর। গত দুই মাসে তৈরি করা হয়েছে অন্তত চারটি বসতঘর।

বাঁধ রক্ষা করে জনপদকে। আর বাঁধকে রক্ষা করে গোলগাছের বাগান। কিন্তু সেই গোলগাছ কেটে সাফ করে লোকে বসতি গড়ে তুললে বন বিভাগ বলছে, তাদের লোকবল নেই দলখদার উচ্ছেদের।

বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের বাবুগঞ্জ বাজার এলাকায় এই চিত্র পাওয়া গেল। সেখানে বন বিভাগের সৃজন করা গোলগাছ কেটে অর্ধশতাধিক বসতঘর তৈরি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, যারা এখানে আছেন, তারা বেশিরভাগ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জমি দখল করে রেখেছেন আর বন বিভাগেরও এতে যোগসাজশ আছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

বাবুগঞ্জ বাজারসংলগ্ন এলাকায় গত শনিবার গিয়ে দেখা যায়, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে সৃজিত গোলগাছের বাগানের মধ্যে অর্ধশতাধিক বসতঘর। গত দুই মাসে তৈরি করা হয়েছে অন্তত চারটি বসতঘর। গোলগাছ কেটে ঘর তৈরি করা হয়েছে। খোকন নামের এক ব্যক্তি সেখানে ঘর তোলার জন্য গোলগাছ কেটে পরিষ্কার করেছেন। পাশে অস্থায়ী বসতঘরে রান্না করছেন নারী সদস্যরা।

স্থানীয় বাসিন্দা মমতাজুর রহমান বলেন, গোলগাছের বাগান ধ্বংস করে ঘর ও রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্ষার সময় এ বাগানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। এতে বাগানের গাছ মরে যাবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। এসব ঘর ও রাস্তা দ্রুত সরিয়ে নেওয়া দরকার।

গোলগাছের বাগানে ঘর তুলছেন শাহ আলম ফকির ও মাকসুদা খাতুন দম্পতি। তারা বলেন, এটা তাদের নিজস্ব জমি। ঘর তোলার সময় পুলিশ ও বন বিভাগের লোক এসেছিলেন। তাদের ‘কিছু দিয়ে’ থামানো হয়েছে।

গোলগাছ কেটে বসতভিটা তৈরি করছেন আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যক্তি। আলমগীরের স্ত্রী মাজেদা বেগম বলেন, ‘ফরেস্টার’-এর কাছ থেকে তারা এ বনের মধ্যে ঘর তোলার অনুমতি নিয়েছেন।

বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশের কথা শোনা গেল স্থানীয় আরও কয়েক জনের কাছ থেকে। বলা হচ্ছে, এর পেছনে আর্থিক লেনদেন আছে।

স্থানীয় বিট কার্যালয়ের কর্মকর্তা জানান, তাদের কার্যালয়ে ১৭ জনের জনবলের জায়গায় সবমিলিয়ে আছেন চার জন। এতো কম লোকজন নিয়ে অবৈধ দখল তদারকি করা যায় না। তাছাড়া অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য তারা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে মামলা করেছেন।

বাবুগঞ্জ এলাকার বিট কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে আমরা এই দীর্ঘ বন রক্ষা করতে পারছি না। জনবল না থাকার স্থানীয় লোকজন গোলগাছের বাগানে জোর করে বসতঘর তুলেছেন।’

ষাটের দশকের শুরুর দিকে বরগুনায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এরপর বাঁধ রক্ষার জন্য বন বিভাগ থেকে বাঁধের পাদদেশে গোলগাছ রোপণ করে বাগান গড়ে তোলা হয়। বাঁধের ১০০ থেকে ২০০ ফুটের মধ্যে জমির মালিক পানি উন্নয়ন বোর্ড। বন বিভাগের বাবুগঞ্জ বিট কার্যালয়ের অভ্যন্তরে ১৪ কিলোমিটার গোলগাছের বাগান রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী কাইছার আহম্মদ বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০০ থেকে ২০০ ফুটের মধ্যে জমির মালিক পাউবো। জমি অবৈধভাবে দখল করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বন বিভাগের পটুয়াখালী কার্যালয়ের উপবন সংরক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এসব অবৈধ দখলদারের প্রতিহত করতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।’

এ বিভাগের আরো খবর