রিসোর্টকাণ্ডে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়া হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়ায়। সদর উপজেলার একটি গ্রামে এই মারামারিতে দুই পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। ভাঙচুর এবং লুটপাট চালানো হয়েছে ১০টি বাড়িতে।
সোমবার সকাল সাতটার দিকে সদর উপজেলার জিয়ারখী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
সংঘর্ষে জড়ানো দুই পক্ষই আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মামুনুলকে নিয়ে রোববার সন্ধ্যায় বাগবিতণ্ডা হয়। এ নিয়েই সোমবার সকালে সংঘর্ষ হয়। তবে পুলিশ বলছে, পুরনো সংঘর্ষের মামলা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষের কারণ নিয়ে জিয়ারখী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আহসান সরদার বলেন, ‘জিয়ারখী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শরীফুল ইসলাম ঘোষণা দেন এলাকায় হেফাজতের কর্মী ও সমর্থক আছে; তাদের শাস্তি দিতে হবে। এই বলে তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থক বিল্লাল হোসেন ও মো. মতিনকে রোববার বিকেলে মারধর করেন।’
ওই ঘটনা নিয়ে সন্ধ্যায় তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ওই ঘটনার জের ধরে ভোরে শরীফুল ও তার নেতা জিয়ারখী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুলের লোকজন তার বাড়িতে হামলা করে। এরপর দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়।
আজিজুল হক বলেন, ‘শরীফুল তার ফেসবুকে হেফাজতের মামুনুলের বিপক্ষে পোস্ট করেন। প্রতিপক্ষ আহসানের পক্ষের কয়েকজন ওই পোস্টে মামুনুলের পক্ষ নিয়ে কমেন্ট করেন। সেখানে তারা শরীফুলকে নরেন্দ্র মোদির সন্তান বলে কটূক্তি করেন। এ ঘটনার জের ধরে সোমবার সকালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।’
তিনি জানান, সংঘর্ষে দুই পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। উভয়পক্ষের ১০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে সাইদুল নামে একজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিয়ারখীর বাসিন্দা আরাশেদ আলী জানান, ভোর ৬টার দিকে দুইপক্ষের বাড়িতে হামলায় মাধ্যমে সংঘর্ষের সূচনা হয়। সকাল ৭টার দিকে তারা দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহতদের মধ্যে ১৮ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মামুনুর রহমানের দাবি, এই সংঘর্ষ হেফাজত নেতা মামুনুলকে নিয়ে নয়। তিনি বলেন, ‘জিয়ারখী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক ও সাবেক সভাপতি আহসান সরদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। তাদের একটি মারামারির মামলা নিয়ে দুই সপ্তাহ আগে সালিস হয়। এ ঘটনার জের ধরেই সংঘর্ষ হয়েছে।’
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত কবীর জানান, এ ঘটনায় পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে। দুই পক্ষই আলাদা করে মামলা করতে চেয়েছে।