ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার (বালু উত্তোলনকারি মেশিন) বসিয়ে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন।
চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন চরের নালা, পুকুর ও ফসলি জমিতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে একটি অসাধু চক্র অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এতে পদ্মা পারের বিভিন্ন গ্রামের ফসলের ক্ষেত, বসতবাড়ি ও অনেকগুলো বাগান হুমকির মুখে পড়েছে।
এভাবে বালু উত্তোলন করায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা।
চর হরিরামপুর ইউনিয়নের আব্দুল হাই খান হাটের বাসিন্দা তোতা মিয়া জানান, হাটে যাতায়াতের জন্য একমাত্র ব্রীজের পাশের খালে গত কয়েক মাস ধরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বসতভিটে ভরাট করছেন শেখ মোস্তফা নামের স্থানীয় একজন ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি বালুর ব্যবসা করেন বলেও জানান তোতা মিয়া।
তিনি বলেন, ‘হাটের পাশে গর্ত করে যেমনে বালু তুলতিছে তাতে বর্ষা আসলি পদ্মা এলাকার রাস্তা ঘাট, ব্রীজ ও হাটের ক্ষতি করবেনে।’
এ বিষয়ে বালু উত্তোলনকারী শেখ মোস্তফা বলেন, যারা তার কাছ থেকে বালু কিনে নিচ্ছেন, তারাই ড্রেজার মেশিন চালানোর ফলে সৃষ্ট সব সমস্যা সমাধান করবেন বলে তাকে আশ্বস্ত করেছেন। এরপরই তিনি বালু উত্তোলন শুরু করেন।
সম্প্রতি ওই ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায় অবৈধভাবে অন্তত আটটি ড্রেজার চালু রয়েছে। এসব মেশিন দিয়ে দিন রাত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এবং পাইপ দিয়ে ভরাট কাজে বালুগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে।
ইউনিয়নের ভাটি শালেপুর মৌজার সরকারি সামাজিক বনায়নের পাশে ফেরদৌস খানের, পাশের আলীমদ্দিনের ডাঙ্গী গ্রামে মাসুদ খান ও শেখ হাবিবের, ভাটি শালেপুর পদ্মার ঘাটের শেখ আঞ্জুর, আব্দুল হাই খান হাট সংলগ্ন এলাকায় শেখ মোস্তফার দুটি ড্রেজার মেশিন, শেখ ছগির ও আলমাস চৌকিদারের ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এ ছাড়া ইউনিয়নের চর বৈদ্য ডাঙ্গী গ্রাম ও মুন্সির বাজার এলাকায় চলমান রয়েছে আরও দুটি ড্রেজার।
স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফ হোসেন বলেন, পদ্মা নদীর দুর্গম চরগুলোয় প্রশাসনের লোকজনের যাতায়াত কষ্টকর হওয়ায় বালু উত্তোলনের কাজ চলছে অবাধে।
এ বিষয়ে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন সুলতানা জানান, চরাঞ্চলে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে যারা বালু উত্তোলন করছেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।