পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে, তা দেখতে প্রতিদিন উৎসুক মানুষের ভিড় পদ্মার দুই পাড়ে। এরই মাঝে মডেল ‘পদ্মা সেতু’র নির্মাণকাজ শেষ করেছে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী।
ধামরাইয়ের স্কুল শিক্ষার্থী সোহাগ হোসেনের গড়া সেই পদ্মা সেতু দেখতেও মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। মাটি ও সিমেন্ট দিয়ে তৈরি সেতুতে নানা কারুকাজে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মূল সেতুর অবয়ব ও সৌন্দর্য। সেতুটি দেখতে প্রতিদিনই ঢাকার ধামরাইয়ে শিক্ষার্থীর বাড়িতে ভিড় করছেন অনেকেই।
উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহাগ হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ঘরের পাশেই বাঁশ ও মাটির কাঠামোতে সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে বানানো হয়েছে পদ্মা সেতু। মূল সেতু ছাড়াও রেললাইন, ল্যাম্পপোস্টসহ অনেক কিছু রয়েছে এই ডামি সেতুতে। রাতের বেলা ল্যাম্পপোস্টগুলোতে আলো জ্বললে অনেক সুন্দর হয়ে উঠে সোহাগের স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
স্কুলছাত্র সোহাগ আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম যেদিনকা পদ্মা সেতুর স্প্যান বসে, ওদিন থাইকাই আমি অনুপ্রাণিত। আমি ওইরকম একটা সেতু করতে চাই। ২০১৮ সালে আমি সেতুর কাজ শুরু করি, তা টিকাইতে পারি নাই। তখন মাটি দিয়া বানাইছিলাম, ভাইঙ্গা গেছে। আবার বৃষ্টির পানিতেও গইলা গেছিল। এ বছর মাটির ওপর হালকা করে সিমেন্ট দিয়ে প্লাস্টার করে দিছি। যাতে সেতুর মাটি গলে না যায়।’
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সোহাগ বলেন, ‘আমি দশম শ্রেণিতে বাণিজ্য বিভাগে পড়ালেখা করতাছি। বাড়ির কাজের পাশাপাশি আমি এই পদ্মা সেতু তৈরি করছি। এতদিন পর এটা বানাইতে পাইরা আমার খুব ভাল লাগতেছে। বাড়ির কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমি ওইটা করছি। অনেক লোক আসতেছে দেখতে। যেই দেখতেছে সেই প্রশংসা করতাছে।’
সুতিপাড়া ইউনিয়নের গার্মেন্ট শ্রমিক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে শুনলাম পদ্মা সেতু তৈরি করছে একটা ছেলে। ব্রিজটা দেখে অনেক সুন্দর লাগল। রেল লাইন আর যে কয়টা রাস্তা সব করছে।’
গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের হাতকোড়া গ্রামের সেলিম মৃধা বলেন, ‘আসল যে পদ্মা সেতু আছে এবং এটা একই রকম। আমি তার কাজে খুব সন্তুষ্ট। দেখে খুশি হইছি।’
সোহাগের বাবা সুলতান উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ছেলে মাটি দিয়া যাই করছে, সব সময় লোকজন আসে দেকতে। সবাই ভাল বলতাছে। আমার খুব আনন্দ লাগতাছে।’
সুতিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি নিজে গিয়া পদ্মা সেতুটা দেইখা আসছি। অনেক সুন্দর হয়েছে কাজটা। প্রতিদিনই লোকজন সেতুটা দেখতে আসতেছে। আমরা এলাকাবাসী ওরে নিয়া গর্বিত।’