নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের দুইদিন পর সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই সাহাদাত হোসেন ও ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাতকে প্রধান আসামি করে ৪ সাংবাদিকসহ ২২৩ জনের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি পাল্টাপাল্টি মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলার আলোকে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা দুটি করা হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দুইটি করেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী আবুল হাশেম এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের অনুসারী করিম উদ্দিন শাকিল। পাল্টাপাল্টি মামলায় চার সাংবাদিকসহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় ২২৩ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে হুমকি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন, ক্ষতিসাধনসহ বেশ কিছু অভিযোগ আনা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরক আইনসহ আরও কয়েকটি ধারা উল্লেখ করে কাদের মির্জার অনুসারী পৌরসভার বৌদ্দনীর বাড়ির বাসিন্দা আবুল হাশেম সেতুমন্ত্রীর ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাতকে প্রধান আসামি, আরেক ভাগনে মাহবুবুর রশীদ মঞ্জুকে তৃতীয় আসামি করে প্রেসক্লাব কোম্পানীগঞ্জের সভাপতি ও ডেইলি অবজারভার কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি হাসান ইমাম রাসেল, দৈনিক সমাচার কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি প্রশান্ত সুভাষ চন্দ, অনলাইন পোর্টাল প্রিয় নিউজের চিফ রিপোর্টার ইকবাল হোসেন মজনু, দৈনিক সকালের সময় নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি আমির হোসেনকে আসামি করে ১৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০-৫০জনকে আসামি করে মামলা করেন।
একই ধারায় অপর মামলাটি করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের অনুসারী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছাত্রলীগ কর্মী করিম উদ্দিন শাকিল। এ মামলায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই সাহাদাত হোসেনকে প্রধান এবং কাদের মির্জার ছেলে মির্জা মাশরুর কাদের তাশিককে দ্বিতীয় আসামি করে ৮৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০-৩০জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগেও বেশ কয়েক বার দুই গ্রুপের বিবাদমান দ্বন্দ্ব-সংঘাতের জেরে অনুসারীরা আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা করেন।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার করালিয়া এলাকায় গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাদের মির্জার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এই পাল্টাপাল্টি মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনের পর থেকে কোম্পানীগঞ্জে কাদের মির্জা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খিজির হায়াত খান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। ওই দ্বন্দ্বের জের ধরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পৌরসভার করালিয়া এলাকার চক্ষু হাসপাতালের সামনে কাদের মির্জার সমর্থক সহিদুল্লাহ রাসেল এবং খিজির হায়াত খানের সমর্থক শাকিল ও রাহিমের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় তাদের সমর্থকরা। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে দুই পক্ষের ৬ জন আহত হন।