মণিরামপুরে গৃহবধূ দেবী টিকাদারকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন পাচু বিশ্বাস নামের কথিত প্রেমিক। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পরকীয়া ও অর্থ লেনদেনের বিরোধে পাচু ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দেবীকে হত্যা করেছেন বলে পুলিশের দাবি।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরে মণিরামপুর উপজেলার কুচলিয়া গ্রামের একটি মাছের ঘেরে পাওয়া যায় গৃহবধূ দেবী টিকাদারের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ। তার বুক, থুতনি এবং হাঁটুতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। দেবী মণিরামপুর উপজেলার কুচলিয়া গ্রামের পীযূষকান্তি টিকাদারের স্ত্রী। শনিবার সন্ধ্যা থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের পর স্বামী পীযূষকান্তি টিকাদার সোমবার রাতে মণিরামপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় দুই থেকে তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।যশোরের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বুধবার রাতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শোলগাতিয়া গ্রাম থেকে পাচু বিশ্বাস নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে। তার দেয়া তথ্যে কুচলিয়া গ্রামের মুকুন্দ সরকারের পুকুর থেকে উদ্ধার হয় হত্যায় ব্যবহৃত বার্মিজ চাকু।
পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিতে পাচু বিশ্বাস জানান, অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী বাজারে তরকারি বিক্রেতা পীযূষকান্তির স্ত্রী দেবী টিকাদারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তারা গোপনে বিয়ে করেন। দেবীকে নিয়ে পাচু অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন।
প্রায় দুই বছর একসাথে থাকার পর তারা নিজ নিজ বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু পাচুর সঙ্গে দেবীর সম্পর্ক রয়ে যায়। গোপনে তারা বিভিন্ন জায়গায় দেখা করতেন। দেবী প্রায়ই পাচুর কাছে টাকা দাবি করতেন। ঘটনার দুই দিন আগে পাচু সাত হাজার টাকা দেন।
কিন্তু দুদিন পরই আবার পাঁচ হাজার টাকা দাবি করলে তর্ক হয়। পাচু তাকে দুই হাজার টাকা দিলেও শান্ত হননি দেবী। ক্ষুব্ধ হয়ে দেবী পাচুকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনার জেরেই পাচু চাকু দিয়ে দেবীকে হত্যা করেন।