কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে এক মোহতামিমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার রাত ১১টায় ওই ছাত্রের বাবা কুলিয়ারচর থানায় মামলাটি করেন। এতে আসামি করা হয়েছে হাফেজ মাওলানা ইয়াকুব আলীকে।
এই শিক্ষক কুলিয়ারচর পৌর সদর এলাকার বড়খারচর আদর্শ নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার চার বছর ধরে মোহতামিমের (প্রধান শিক্ষক) দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
১১ বছর বয়সী ওই ছাত্রের বাবা নিউজবাংলাকে জানান, কয়েকদিন ধরে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল তার ছেলে। মাদ্রাসায় আর যাবে না বলেও জানায় সে। পরিবারের সবাই জোর করেও তাকে মাদ্রাসায় পাঠাতে পারছিলেন না।
পরিবারের সদস্যদের চাপে বুধবার মায়ের সঙ্গে মাদ্রাসায় যাবে বলে রাজি হয় ছেলেটি। বাড়ি থেকে বের হয়েই সে তার মাকে জানায় মাদ্রাসায় নয়, সে যাবে পুলিশের কাছে।
ছেলেটির মা তখনও ভাবেন মাদ্রাসায় না যেতে চাওয়ার কারণে বাড়িতে তাকে মারধর করা হয়েছে, এ জন্য বোধহয় সে থানায় যেতে বলছে। তাই তাকে বুঝিয়ে থানার সামনে থেকে ফিরিয়ে আনেন মা।
তখন ওই শিশু ছাত্র তার মাকে জানায়, সে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি সাত্তার মাস্টারের কাছে যেতে চায়। সেখানে গিয়ে মায়ের উপস্থিতিতে পুরো ঘটনা খুলে বলে ছেলেটি।
ওই মাদ্রাসায় প্রায় ৩০০ জন ছাত্র পড়াশুনা করে। আর আসামি ইয়াকুব আলী বিবাহিত। তার একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে।
শিশুটি জানায়, মোহতামিম ইয়াকুব আলী হুজুর গত ১ এপ্রিল গভীর রাতে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে তার কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে বলাৎকার করা হয়।
পরদিন কোরআন ছুঁইয়ে বিষয়টি কাউকে না বলার শপথ পড়ানো হয় শিশুটিকে। এরপর মাদ্রাসা থেকে কাউকে না বলে সে বাড়িতে চলে আসে।
এ বিষয়ে জানতে আসামি ইয়াকুব আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে তার সাড়া পাওয়া যায়নি। এসএমএস পাঠালেও তিনি কোনো জবাব দেননি।
মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুস সাত্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই ছাত্র তার মাকে নিয়ে এসে আমার কাছে পুরো ঘটনা খুলে বলেছে। আমি আমাদের কমিটির সকল সদস্যদের নিয়ে মিটিং করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম সুলতান মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’