হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ভবনে কোনো কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। অনন্যোপায় হয়ে ভবন লাগোয়া এলাকায় তাবু খাটিয়ে নগরবাসীকে সেবা দিচ্ছে নগর কর্তৃপক্ষ।
পৌরভবনের সামনে সড়কের উপর ত্রিপালের তাবু তৈরি করা হয়েছে। আর সেই তাবু এক পাশে ব্যানারে লেখা ‘অস্থায়ী কার্যালয়’।
যতদিন পর্যন্ত পৌর ভবনের মেরামত কাজ শেষ না করা হবে ততদিন পর্যন্ত গাছতলার নিচে, সড়কে তবু টাঙানো এই অস্থায়ী কার্যালয় থেকে পৌরবাসীকে নাগরিক সেবা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় পৌরসভা ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে বসেই দায়িত্বভার গ্রহণ করেন পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র নায়ার কবির ও কাউন্সিলররা।
মেয়র বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের কারণে পৌরসভা ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সবকিছু পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় বসে মেয়রের দায়িত্ব নিতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে পৌর নাগরিকরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সেজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে নাগরিক সেবা চালুর চেষ্টা চলছে। সকলের সহযোগিতা না পেলে ধ্বংস্তূপে পরিণত পৌরসভার সেবা চালু করা সম্ভব হবে না।’
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার সচিব মো. শামছুদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী নিকাশ চন্দ্র মিত্র, সহকারী প্রকৌশলী মো. কাউসার আহমেদ ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. কাউসার।
গত ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের হরতালের দিন জেলা শহরটিতে হেফাজত সমর্থক মাদ্রাসা ছাত্ররা তাণ্ডব চালায়। তারা জেলা পরিষদের পাশাপাশি পৌরসভা ভবন, ভূমি অফিস ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেয়। হামলা হয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে।
জেলার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিরক্ষায় স্থাপিত সব স্থাপনা. এমনকি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলক ভেঙে সেখানে দেয়া হয়েছে আগুন। এর দুই দিন আগে শহরের স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এ কারণে সেখানে ট্রেনের যাত্রাবিরতি বন্ধ রয়েছে।