হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের পক্ষে ফেসবুকে লেখালেখি করে এবার পদ হারিয়েছেন রাঙ্গামাটির এক ছাত্রলীগ নেতা।
এর আগে চট্টগ্রাম ও সুনামগঞ্জে দুই ছাত্রলীগ নেতার একই পরিণতি হয়েছিল।
রাঙ্গামাটি পৌর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিদ্যুৎ বিভাগের মিটার রিটার আবির হাসান ফেসবুকে কেবল মামুনুলের পক্ষেই লেখেননি, তিনি সরকারের সমালোচনাও করেছেন।
এ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার আবিরকে বহিষ্কার করেছে রাঙ্গামাটি পৌর ছাত্রলীগ।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম আলাউদ্দিন এবং সাধারন সম্পাদক অপুশ্রীং লেপসা ।
ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় পৌর ছাত্রলীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হলো। যদি সে কোনো অন্যায় কাজ করে থাকে,তবে তার দায় পৌর ছাত্রলীগ নেবে না।’
রাঙ্গামাটি পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম আলাউদ্দিন বলেছেন, ‘সে এতদিন ছাত্রলীগ করত, এটাই আমাদের জন্য লজ্জার ও কষ্টের। রিজার্ভবাজার এলাকার বড় ভাইদের অনুরোধে তাকে সংগঠনের কমিটিতে রেখেছিলাম। সে সংগঠনের কোনো কর্মসূচিতেও আসত না।
‘তারপর একের পর এক সরকার ও দেশবিরোধী স্ট্যাটাস, হেফাজত-মামুনুল-আজহারীর পক্ষে লেখালেখি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিচ্ছিল সে। ছাত্রলীগ নেতা হয়েও এই ধরনের লেখালেখির কারণে আমরা বিব্রত। তাই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের জন্য জেলা কমিটিকে সুপারিশ করেছি।’
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা বলেন, ‘যে হেফাজত দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জাতির জনকের ছবি-ম্যুরাল ভাঙচুরসহ জঘন্য সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কাজ করেছে, তাদের পক্ষে যে নেতা-কর্মীই অবস্থান নিক না কেন, আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেব।’
মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে স্ট্যাটাস দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে আবীর হাসান জানিয়েছেন, ‘মামুনুল হকের সঙ্গে যেটি হয়েছে আমি তার প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমি তো কারও বিরুদ্ধে কিছু বলিনি।’
তবে কিছু স্ট্যাটাসের জন্য তিনি ‘অনুতপ্ত’ বলেও জানান।
আবির হাসান ছাত্রলীগে কীভাবে পদ পেয়েছেন, এটা নিয়েই আছে প্রশ্ন। কারণ নিজে জানিয়েছেন, তিনি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে মিটার রিডার হিসেবে কাজ করছেন।
সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো চাকরিরত ব্যক্তি ছাত্রলীগে পদ পেতে পারে না।
তবে রাঙ্গামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার জানিয়েছেন, ‘এই ছেলের (আবীর হাসান) বিরুদ্ধে আগেই আমরা কিছু অভিযোগ পেয়েছি। তাই গত মাসেই তাকে অব্যাহতি দিয়েছি। সে আমাদের এখানে অস্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিল, এখন আর নেই।’
বুধবার একই অভিযোগে কাপ্তাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুককে বহিষ্কার করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ।