দিনাজপুরে চলন্ত ট্রেনে জন্ম নেয়া শিশু মিতালীকে ট্রেনেই বাড়ি পাঠাল দিনাজপুর রেল কর্তৃপক্ষ
দিনাজপুর রেলস্টেশন থেকে বুধবার একটি গ্যাংকার ট্রেনে শিশু মিতালী ও তার পরিবারকে বাড়ি পাঠানো হয়।
এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ ও দিনাজপুর রেলস্টেশনের সুপার জিয়াউর রহমানসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিশু মিতালীর মা মুক্তি পারভীন বলেন, ‘রেল কর্তৃপক্ষ আমাদের জন্য এত বড় উপকার করল, আমরা তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকব। আমার বিপদের সময় তারা অনেক করেছে। আমার মেয়ের নাম তারা মিতালী রাখে। এতে আমি অনেক খুশি।’
শিশু মিতালীর বাবা ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ভুমরাদহ হাজিপাড়া গ্রামের মনসুর আলী।
তিনি জানান, তার স্ত্রী মুক্তি পারভীন সন্তানসম্ভবা ছিল। ৮ এপ্রিল সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল। তাই তিনি রোববার (৪ এপ্রিল) দিনাজপুরের সেন্ট ভিনসেন্ট হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর জন্য পীরগঞ্জ স্টেশন থেকে আন্তঃনগর ট্রেন দ্রুতযান এক্সপ্রেসে উঠেন। ট্রেনের ওঠার পর পথে প্রসবব্যথা শুরু হয় তার।
এ সময় ট্রেনে থাকা মহিলা যাত্রীদের সহায়তায় মুক্তি নিরাপদে সন্তান প্রসব করেন। ততক্ষণে ট্রেন এসে দিনাজপুর স্টেশনে পৌঁছালেও ফুল না পড়ার কারণে মুক্তি ও নবজাতককে ট্রেন থেকে নামানোর মতো পরিস্থিতি ছিল না।
এ সময় স্টেশন সুপার এবিএম জিয়াউর রহমান সিদ্ধান্ত দেন প্রসূতি মা মুক্তি ও নবজাতক নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন দিনাজপুর স্টেশন ছেড়ে যাবে না।
স্টেশন সুপার এবিএম জিয়াউর রহমান বলেন, ‘রোববার ট্রেনটি দিনাজপুরে আসার পর ঘটনাটি জেনে আমি ট্রেনটি আটকে রাখি। ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের ১৭ মিনিট পর ছেড়ে যায়।
‘আমরা মুক্তি পারভীন ও নবজাতককে নিরাপদে ট্রেন থেকে নামিয়ে বিনা ভাড়ায় অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছি। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নুর মোহাম্মদকে জানাই। পরে তিনি আমাকে শিশুসন্তানটির নাম মিতালী রাখার জন্য বলেন।’
স্টেশন সুপার আরও বলেন, ‘বুধবার দুপুরে রেলওয়ের একটি গ্যাংকার ট্রেনে শিশু মিতালী ও তার পরিবারের অন্যানদের তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিই। গ্যাংকারটি রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ছিল।’
সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ীর মধ্যে মিতালী এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেনের উদ্বোধন করেন।