ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনার সময়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে আইসোলেশন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন চিকিৎসক একরামুল রেজা। কিন্তু চিকিৎসকদের প্রণোদনার তালিকায় এই কর্মকর্তার নাম নেই।
হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক একরামুল রেজার নাম ইচ্ছাকৃতভাবে অন্তর্ভুক্ত করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
একরামুল রেজা ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। করোনার সময় সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে আইসোলেশন ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেছেন।
গত বছরের ১৩ অক্টোবর আকস্মিক তাকে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়। তিনি বর্তমানে এই হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা।
গত বছরের ৫ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। প্রথমদিকে জেলা শহরের মেড্ডা এলাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালকে করোনা রোগীদের আইসোলেশন ইউনিট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ওই ইউনিটে প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন সে সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা একরামুল রেজা।
প্রণোদনার তালিকায় নেই চিকিৎসক একরামুলের নাম। ছবি: নিউজবাংলা
গত ২৫ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে করোনার সময়ে দায়িত্ব পালন করা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রণোদনার তালিকা ও তাদের প্রণোদনার বরাদ্দ পাঠানো হয়। তালিকায় হাসপাতালের ৫১ জন চিকিৎসক ও ৬১ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৮৪০ টাকা বরাদ্দ করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক জানান, ফেসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক একরামুল রেজাকে হাসপাতাল থেকে অন্যত্র বদলি করা হয়।
একরামুল রেজা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার সময় যতটুকু পেরেছি সামনে থেকেই কাজ করেছি। সবাই এটা জানে। এখানে প্রণোদনার টাকার বিষয় না, রাষ্ট্রীয়ভাবে কাজের স্বীকৃতির বিষয়। তাই প্রণোদনার তালিকায় আমার নাম থাকা উচিত ছিল।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রানা নুরুস শামস তালিকা থেকে তার নাম বাদ দিয়েছেন অভিযোগ করে একরামুল বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আমার অনুরোধ, আমাকে কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হোক।’
তবে রানা নুরুস শামস বলেন, ‘করোনার সময় কাজ করা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রণোদনার তালিকা প্রস্তুতের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তালিকা প্রস্তুত ও পাঠানোর বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ভালো বলতে পারবেন। আর আমি একরামুল রেজার নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়েছি, বিষয়টি সত্য না।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন বলেন, ‘এমরামুল রেজা অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন। নতুন কর্মস্থল থেকে তার নাম পাঠানোর কথা।’