রৌমারীর যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের পুকুর দখলে নিতে একটি মহল সোমবার রাতের আধারে চারটি ঘর তুলেছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দাখিল করেছেন যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরবেশ আলী। দখলে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে রৌমারী সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) ও উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আব্দুল আউয়ালের বিরুদ্ধে।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, রৌমারী উপজেলার যাদুরচর মৌজার অন্তর্ভুক্ত যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের নামে দলিলকৃত ও ভোগদখলীয় জমিতে পুকুরের একটি অংশ আরএস রেকর্ডে ১নং খতিয়ান ভুক্ত হয়। যার আরএস দাগ নং ৩৬৪৬, জমির পরিমাণ ৩০ শতাংশ। সোমবার গভীর রাতে কয়েকজন জমিটিতে ঢুকে পুকুর পাড়ের একাংশে টিনের ঘর তুলেন। এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮জন গ্রাম পুলিশ তাদের ঘর তুলতে বাঁধা দিয়ে ব্যর্থ হন।
গ্রাম পুলিশ সোনা মিয়া বলেন, ‘সোমবার রাতে অবৈধভাবে ঘর তুলতে বাঁধা দিলে তারা আমাদের হুমকি দেয়। জোরপূর্বক পুকুরের পাড়ে তারা ছোট ছোট ৪টি ঘর তোলে।’
দখলের এ ঘটনায় দুজন ভূমি কর্মকর্তাসহ ৭জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরবেশ আলী। এর আগে পুকুরটি অবৈধ দখলের আশঙ্কায় তিনি সোমবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।
ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের নামে কবলাকৃত ও ভোগদখলীয় জমিতে থাকা পুকুরটি প্রতি বছর ইজারা দেওয়া হয়। সোমবার রাত তিনটার দিকে স্থানীয় মোশারফ হোসেন, মোস্তফা,জাহাঙ্গীর আলম, কাউয়ুম আলী ও খবিরন বেওয়া নামে ৫জন জোরপূর্বক ঘর তুলেছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক,ইউএনওসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।’
চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেন, ‘দখলের ঘটনায় রৌমারী সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাহাদৎ ও সার্ভেয়ার আব্দুল আউয়ালের প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে। কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই ও মাঠ জরিপ ছাড়াই দুই ভূমি কর্মকর্তা পুকুরের একাংশ অবৈধ পন্থায় ৫ ব্যক্তির নামে ভূমিহীন বন্দোবস্ত দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।’
যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সবুজ বলেন, ‘চেয়ারম্যান সরবেশ আলীর গাফিলতিতে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের পুকুরটি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। উপজেলা ভূমিহীন বন্দোবস্ত কমিটিতে থাকার পরও কিভাবে ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা অন্যের নামে হয়ে যায়?’
রৌমারী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের পুকুর ১নং খাস খতিয়ানভূক্ত হওয়ায় জমিটি ভূমিহীন বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে।’
ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘বিধি মোতাবেক সব করা হয়েছে।’
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান বলেন, ‘অবৈধভাবে ভূমিহীন বন্দোবস্ত দিয়ে থাকলে তা তদন্ত করে বাতিল করা হবে।’