সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু-অধ্যুষিত গ্রামে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার দায়ে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হককে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া দিরাই থানার ওসি আশরাফুল ইসলামকে মৌলভীবাজারে বদলি করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হককে সাময়িক বরখাস্ত ও দিরাই থানার ওসি আশরাফুল ইসলামকে মৌলভীবাজারে বদলি করা হয়েছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছিল।
সিলেট পুলিশ রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, হিন্দু-অধ্যুষিত গ্রামে হামলার ঘটনায় শাল্লার থানার ওসি ও দিরাই থানার ওসির দায়িত্বে অবহেলার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ জন্য ওসি নাজমুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে বরিশাল রেঞ্জে যুক্ত হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া দিরাই থানার ওসি আশরাফুলকে মৌলভীবাজারে বদলি করা হয়েছে।
ওসি নাজমুল ও ওসি আশরাফ
১৫ মার্চ শাল্লার পাশের দিরাইয়ে সমাবেশ করে হেফাজত। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা মামুনুল ওই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। পরদিনই নোয়াগাঁও গ্রামের এক তরুণ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। তাতে মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়।
মঙ্গলবার রাত থেকেই ওই স্ট্যাটাস নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে এলাকায় বিক্ষোভের ঘোষণা দেয় হেফাজত।
উত্তেজনা আঁচ করতে পেরে নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তারা ফেসবুকে পোস্ট দেয়া তরুণকে মঙ্গলবার রাতেই পুলিশের হাতে তুলে দেন।
বুধবার সকালে কয়েক হাজার মানুষ দা-লাঠিসহ নোয়াগাঁও গ্রামে মিছিল নিয়ে এসে ভাঙচুর করে ৮৭টি হিন্দু বাড়ি। এসব ঘর থেকে টাকাপয়সা-স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। একটি মামলার প্রধান আসামি যুবলীগ নেতা শহিদুল ইসলামকে মৌলভীবাজার থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।