বগুড়ায় মোটরমালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষে পুলিশকে ছুরিকাঘাতের মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ নিউজবাংলাকে জানান, প্রায় এক সপ্তাহ আগে এই অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, অভিযোগপত্রে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন, যুবলীগ নেতা আদিলসহ সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বগুড়ায় মোটরমালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি চারমাথা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পুলিশের বিশেষ শাখার সদস্য রমজান আলীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি চারটি মামলা হয়।
এর মধ্যে একটিতে সদর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মোটর মালিক গ্রুপের সর্বশেষ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ৩৩ জনের নামে মামলা করেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ছোট ভাই মশিউল আলম দীপন।
তবে এ মামলায় ৩৩ আসামির মধ্যে ৩০ জনের জামিননামার ভুয়া নথি তৈরি করা হয়। বিষয়টি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ধরা পড়ার পরপরই বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামিদের গ্রেপ্তারের আদেশ দেয়।
এ আদেশের পর গত ৪ মার্চ আমিনুলসহ ১৬ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তাদের কারাগারে পাঠায় আদালত। এর আগের দিন আত্মসমর্পণ করা অন্য ১৪ আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, বিস্ফোরণ, অবৈধ দখলবাজিসহ আরও কয়েকটি অভিযোগে দুইটি মামলা করেন আমিনুল ইসলাম। মোহনকে প্রধান করে ৫২ জনের নামে মামলা দুটি করা হয়। অজ্ঞাত পরিচয় আসামি করা হয় ২০০ জনকে।
পুলিশের করা মামলায় যুবলীগ নেতা জাকারিয়া আদিলকে এক নম্বর আসামি করা হয়।
বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে গত তিন বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর মধ্যে এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে মোহন, আরেক গ্রুপে আছে আমিনুল।
তিন বছর আগে বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের একটি নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে আকতারুজ্জামান ডিউক সভাপতি ও আমিনুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তখন থেকে এই ভোটকে অবৈধ দাবি করে আসছেন মঞ্জুরুল আলম মোহন। তার দাবি, কোনো আইন কানুন না মেনেই নির্বাচন করা হয়েছে। এরপর আদালতে গড়ায় বিষয়টি।