লকডাউনে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের সময় পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয়রা। এ সময় এলাকার লোকজনের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয় ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ, পৌর মেয়র ও প্রেসক্লাবের সাংবাদিকেরা মাইকে প্রচার চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সোমবার রাত আটটার দিকে কুয়াকাটা চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক সোমবার সন্ধ্যা থেকে কুয়াকাটার বিভিন্ন এলাকায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারঘোষিত কঠোর নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যবসায়ী এবং পথচারীদের ঘরে ফেরার তাগিদ দেন।
রাত আটটার দিকে চৌরাস্তা এলাকায় একটি পত্রিকার (তালাশ) স্টিকার লাগানো মোটর সাইকেলযোগে মো. ইলিয়াস শেখ নামে এক যুবককে থামিয়ে তিনি তার মুখে মাস্ক নাই কেন জানতে চান এবং মাস্ক পরতে বলেন। এ সময় ইলিয়াছ শেখ নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন। এ সময় ইউএনও এবং তার সাথে থাকা পুলিশের সঙ্গে ইলিয়াছ শেখের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
ইলিয়াস শেখ কুয়াকাটা সৈকতে ফটোগ্রাফারদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। হাতাহাতির খবর ছড়িয়ে পড়লে শতাধিক ফটোগ্রাফার চৌরাস্তায় এসে বিক্ষোভ করে ইউএনওকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এক পর্যায়ে টুরিস্ট পুলিশের সহায়তায় সেখান থেকে ইউএনও মুক্ত হন। খবর পেয়ে মহিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে স্থানীয়দের। প্রায় ঘণ্টাখানেক এ অবস্থা চলার পর মহিপুর থানার ওসি, পৌর মেয়র এবং প্রেসক্লাব সভাপতি মাইকে সবাইকে নিবৃত্ত করার প্রচারনা চালালে পরিবেশ শান্ত হয়।
এ ব্যাপারে ইলিয়াস শেখ বলেন, ‘কুয়াকাটা চৌরাস্তায় এলে ইউএনও আমার মোটরবাইক থামিয়ে পরিচয় জানতে চাওয়া মাত্রই আমাকে মারধর শুরু করেন। পরে স্থানীয়রা এ খবরে উত্তেজিত হয়ে তাকে অবরুদ্ধ করেছে।’
মহিপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত লোকজনকে ঘরে ফেরার অনুরোধ জানাই। তারা ফিরে যায়। বর্তমানে পরিবেশ স্বাভাবিক ও পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক জানান, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গেলে স্থানীয় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা ক্ষেপে যান। এক পর্যায়ে তারা আমাকে কিছুক্ষণের জন্য ঘেরাও করে রাখার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ পরিবেশ স্বাভাবিক করে।’
তিনি আরো জানান, ‘ইলিয়াছ শেখকে কিছুদিন আগে ইয়াবাসহ আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়া হয়েছিল। তা ছাড়া তার মালিকানাধীন একটি আবাসিক হোটেলেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছিল। এ সব মিলিয়ে পূর্বের ঘটনাকে মাথায় রেখে ওরা এ কাজটি করেছে। তিনি একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হয়ে নিজেকে সাংবাদিকের পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।’