জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে তুলসীগঙ্গা নদীর একটি সেতুর পিলার ভেঙে গেছে। নদী খননের কাজে অতিরিক্ত মাটি তোলার কারণে ফিচকার ঘাট এলাকার এ সেতুর পিলার ভেঙে গিয়ে সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছে।
১৫০ ফুট দীর্ঘ এই সেতুর পশ্চিম পাশে আটোল, বিননগর ও গোপালপুর গ্রাম। আর পূর্ব পাশে ফিচকা, মুষলধার, সরাইল গ্রাম। নদী খননকাজ শুরু হয় মার্চ মাসের শুরু থেকে। আর সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয় মার্চের ২০ বা ২২ তারিখের দিকে।
সেতু অচল হয়ে যাওয়ায় জেলার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গাইবান্ধা, রংপুর, বগুড়া ও ঢাকার সরাসরি পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থা। এলাকাবাসীকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। জেলার পাঁচবিবি-গাইবান্ধা সড়কের সব ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শুকনা মৌসুমে পানি ধরে রাখতে ও বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে খননকাজ চলছে তুলসীগঙ্গা নদীতে।
সেতু অকেজো হয়ে যাওয়ায় বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা করা হলেও তাতে ভোগান্তি কমেনি জনসাধারণের।
ফিচকার ঘাটসংলগ্ন বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক আজাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যখন তারা (পানি উন্নয়ন বোর্ড) নদী খনন করে তখন আমরা বলেছিলাম নদীর পাড়ে মাদ্রাসা-মসজিদ আছে, গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্রিজ আছে। এ এলাকায় যেন বেশি মাটি খনন না করে। কিন্তু তারা আমাদের কথায় পাত্তাই দেয়নি। বেশি মাটি খনন করায় ব্রিজটি এখন ভেঙে পড়েছে। এর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডই দায়ী।’
ব্যবসায়ী মোকলেসার বলেন, ‘ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় কোনো গাড়ি বা যানবাহন পার হতে পারছে না। এতে আমাদের ব্যবসারও অনেক সমস্যা হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি ব্রিজটা নির্মাণ করা প্রয়োজন।’
জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পের স্বার্থে নদীর ব্রিজের আগে একটা রিং বার দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রবল পানির বেগে সেই রিং বার ভেঙে ব্রিজের পিলারে আঘাত করে। পুরাতন ব্রিজের পিলারগুলোতে ইটের গাঁথুনি ছিল। তাই পানির বেগে পিলারগুলো ভেঙে যায়।
‘এতে করে ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি। ব্রিজের পাশ দিয়ে ডাইভারশন করে দিয়েছি। আগামী বর্ষার আগে একটি কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করে দিব।’
এমন দুর্ভোগের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষই দায়ী বলে ইঙ্গিত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ জয়পুরহাট এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে কথা বললে জয়পুরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলাউদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, যেকোনো মুহূর্তে ব্রিজটি ভেঙে পড়তে পারে। যত দ্রুত সম্ভব ব্রিজ নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়া হবে। গাফিলতির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
ব্রিজটি অকেজো হওয়ায় কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারছেন না এলাকার কৃষকেরা।