বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘বিষপানে’ গৃহবধূর মৃত্যু: জীবন শঙ্কায় দুই শিশু

  •    
  • ৪ এপ্রিল, ২০২১ ১৯:৩১

‘সকালে নাতনি আইয়্যা কইছে বাবায় মায়রে মারছে। অগো মাজে মদ্যেই জগড়া-মারামারি হয়। আগে অনেক মিটাইছি। মাইয়ার জামইডা কাজে কম যাইত। হেইয়্যার লিগ্যাই বেশি কাইজ্যা লাগতো। মাইয়া তো গেলো, নাতি-নাতকুর বাঁচে কিনা আল্লাহ জানে।’

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে সুমাইয়া আক্তার নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। সুমাইয়ার দুই বছর বয়সী ছেলে আবু হুরায়রা ও সাড়ে তিন বছর বয়সী মেয়ে হালিমা আক্তার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। চিকিৎসকদের ধারণা, সুমাইয়া ও তার সন্তানেরা বিষপান করেছিল।

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার দাশের জঙ্গল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা সোহেব আলী নিউজবাংলাকে জানান, সুমাইয়া ওই গ্রামের সোহাগ খানের মেয়ে। ২০১৭ সালে তার সঙ্গে পাশের লক্ষ্মীপুর গ্রামের ভ্যানচালক সাইফুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের মাথায় জন্ম হয় মেয়ে হালিমা আক্তারের। এর দেড় বছর পর জন্ম নেয় ছেলে আবু হুরায়রা। তারা দাশের জঙ্গল গ্রামে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।

তিনি আরও জানান, শুরু থেকেই অর্থের অভাবে কষ্টে চলছিল তাদের সংসার। এ নিয়ে লেগে ছিল কলহ।

সুমাইয়ার প্রতিবেশী ফাহিমা বেগম বলেন, ‘আমি ওলো রান্দা বহাইছি। অহন গরের বিতর ছেলে মেয়ে কান্দে। মেয়েডা কইতাছে নানুগো আমারে বাঁচাও, আমারে বাঁচাও। রান্দা থুইয়্যা যাইয়্যা দেহি কি তিনো জোনে বিষ খাইয়্যা হেইয়ার পরে দপাইতাছে। আমরা তরাতরি গাড়ি আইনগ্যা গোসাইরহাট হাসপাতালে আনছি। হেন থোন ওয়াশ কইরা হেইয়ার পরে কইছে আমনেরা শইরাতপুর লইয়া যান।’

সুমাইয়ার স্বামী সাইফুল বলেন, ‘আমার ইসতিরির খুব রাগ ছিল। অতিরিক্ত রাগ ছিল। আমি একটা কইলে হে তিনডা কইতো। কালইগো কথা কাটাকাটি হইছিল। কি লইয়্যা অইছিল মনে নাই। সকালে উইট্যা কইতাছে জাপটি (চাপটি) বানাইয়্যা দিমু। খাইয়্যা যাইবা। হ্যাশে বাজার যাইগ্যা। পরে বারোডার সময় হুনি অয় বিষ খাইছে। হাসপাতালে লইয়া গেছে। আমি হাসপাতালে যাইয়্যা দেহি সুমাইয়ার হুশ নাই। আর পোলাহান দুইডায় ক্যামন জানি করে।’

সুমাইয়ার মা রহিমা বেগম বলেন, ‘সকালে নাতনি আইয়্যা কইছে বাবায় মায়রে মারছে। অগো মাজে মদ্যেই জগড়া-মারামারি হয়। আগে অনেক মিটাইছি। মাইয়ার জামইডা কাজে কম যাইত। হেইয়্যার লিগ্যাই বেশি কাইজ্যা লাগতো। মাইয়া তো গেলো, নাতি-নাতকুর বাঁচে কিনা আল্লাহ জানে।’

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘গোসাইরহাট থেকে একই পরিবারের তিন জন রোগী আসে। নারীকে মৃত অবস্থায় পাই। আর শিশু দুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তারা বিষপান করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। ’

গোসাইরহাট থানার ওসি মোল্লা সোহেব আলী বলেন, সাইফুলের ঘর থেকে কীটনাশক পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য সুমাইয়ার মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এ বিভাগের আরো খবর